আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – সিভিল কন্সট্রাকশনের মোজাইক যা অধ্যায়-৪ এর সিভিল কন্সট্রাকশন ২ এ অন্তভুক্ত। শিক্ষাক্রম উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকসমূহ পরিবর্তনশীল চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগী হওয়াসহ উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হবে। ফলে রূপকল্প- ২০২১ অনুযায়ী জাতিকে বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রশিক্ষিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে আমরা উজ্জীবিত।
Table of Contents
সিভিল কন্সট্রাকশনের মোজাইক
মোজাইক
সাধারণ পাথরের পরিবর্তে ছোট ছোট মার্বেল পাথরের টুকরা সিমেন্ট, বালি দ্বারা তৈরি বা টাইলযুক্ত কৃত্রিম পাথরের দ্বারা যে মেঝে তৈরি করা হয় তাকে মোজাইক মেঝে বলে। এই পাথরের টুকরাগুলো বিভিন্ন রংয়ের ও আকারের হয়ে থাকে। এগুলো দেখতে সুন্দর ও ঝকঝকে, তবে মোজাইক মেঝে তৈরিতে খরচ বেশি পড়ে।
আর সি সি স্লাবের উপর পেটেন্ট স্টোনের স্তর তৈরি করে তার উপর সাদা সিমেন্ট, মার্বেল পাউডার, পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট ও মার্বেল পাথর চিপস সহযোগে তৈরি পেষ্ট দ্বারা এ মেঝে নির্মাণ করা যায়। তাছাড়া আর সি সি মেঝেকে চিপিং করে তার উপর ১:২ অনুপাতে ৩/৮ পুরু মসলার উপর মোজাইক টাইল বসিয়েও মোজাইক টাইলের মেঝে নির্মাণ করা যায়।
মোজাইক তৈরির মালামাল
নিম্নের মালামালগুলো মোজাইক মেঝে তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
১) সাদা সিমেন্ট
২) মার্বেল চিপস
৩) মার্বেল পাউডার
৪) পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (প্রয়োজন হলে)
৫) অকজালিক এসিড
৬) মোম
মোজাইক তৈরির মালামালের
অনুপাত পেটেন্ট স্টোনের অনুপাত = ১:২
সাদা সিমেন্টঃ মার্বেল পাউডারঃ গ্রে সিমেন্ট = ১:১.৫:৩
মোজাইক মেঝে তৈরির পদ্ধতি
প্রথমে তৈরি করা আর সি সি মেঝেকে ব্রাশ ও পানি সহযোগে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর প্রয়োজন মনে করলে ১:২ অনুপাতে সিমেন্ট মসলার স্তর দিয়ে পেটেন্ট স্টোন দিতে হবে। পেটেন্ট স্টোন এর উপর সাদা সিমেন্ট + মার্বেল পাউডার + গ্রে সিমেন্ট (১:১.৫:৩) এর সাথে মার্বেল পাথর চিপস সমান পরিমাণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে কর্ণি দ্বারা স্থাপন করতে হবে। কমপক্ষে ৭ দিন কিউরিং করার পর পিউমিক পাথর দ্বারা কায়িক শ্রমে বা মেশিন দ্বারা মসৃণ করে নিলে মেঝে তৈরি হয়ে যাবে।
গ্লাস মোজাইক মেঝে তৈরি করতে ৫ মি মি প্লেট গ্লাস ফালি আকারে টুকরা করে মেঝেতে বর্গাকার বা যে কোন আকারে বসিয়ে তার মাঝে মোজাইক পেন্ট ঢালাই করে কাজ শেষ করতে হবে।
তাছাড়া পেটেন্ট স্টোনের উপর ২০ সে মিস্ত্র ২০ সে মি আকারের বিভিন্ন রংয়ের টাইল বসিয়েও মোজাইক টাইলের মেঝে নির্মাণ করা যায়। টাইলগুলো বসানোর সময় পাশাপাশি দুইটি টাইলের জোড়ের মাঝে সিমেন্ট মসলা ব্যবহার করতে হয়।
কিউরিং হওয়ার পর দুইটাইলের মধ্যবর্তী জোড়াপুলো পাথর দ্বারা ঘষে টাইলের সাথে একই উচ্চতায় আনতে হবে।
মোজাইক কাজের অবস্থান
মোজাইক সচরাচর যেখানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজন হয় বা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হয় সেসব স্থানে করা হয়। যেমন- হাসপাতাল, বিশেষ করে অপারেশন থিয়েটার, অফিস, ভুলগৃহ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবাসিক বাড়ির সিঁড়িঘর, রাঙ্গাঘর, গোসলখানা ও পায়খানা ইত্যাদি স্থানে। ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থাপনায় মোজাইকের ব্যবহার দেখা যায়।
মোজাইক এর প্রয়োজনীয়তা
নিম্নে মোজাইক কাজের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হলো।
১) নিশ্ছিদ্র মেকে তৈরির জন্য মোজাইক করা হয়।
২) মোজাইক করা যেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সুবিধা বেশি। ৩) মেঝের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য মোজাইক করা হয়।
৪) সেকে যাতে ফাটল না ধরে বা ধরলেও যেন তা নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে সেজন্য সোজাইক করা হয়।
৫) মেঝের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
৬) মোজাইক করা মেঝে যে কোন প্রকার মেঝে হতে দীর্ঘস্থায়ী হয়
মোজাইক কাজে ব্যবহৃত
যন্ত্রপাতি ও ব্যবহার নিম্নে মোজাইক কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির নাম উল্লেখ করা হলো।
১) পেটেন্ট স্টোন করার জন্য-
কোদাল বা বেলচা, বালতি, মগ, কর্দি, কড়াই।
২) মোজাইক করার জন্যঃ
পিউমিক পাথর বা সোজাইক পরিষ্কারক করার যন্ত্র পিউমিক পাথর দ্বারা কায়িক শ্রমে বা মেশিন দ্বারা মসৃণ করে মোজাইক মেঝে তৈরি করা হয়। মূলত ফিনিশিং কাজে ব্যবহার করা হয়। কর্শি, কোদাল বা বেলচা, কড়াই, বালতি, মগ মোজাইক মেঝে তৈরিতে সাহায্যকারী কাজে ব্যবহৃত হয়।
মোজাইক কাজে প্রয়োজনীয় সর্তকতা
নিয়ে মোজাইক মেঝে তৈরি করার সময় যে সর্তকতা গ্রহণ করতে হয় সেগুলো উল্লেখ করা হলো।
১) পিউমিক পাথর বা মোজাইক কাটিং মেশিন দ্বারা এমনভাবে ঘষতে হবে যাতে মেঝের উপরি অংশের কোন জায়গা উঠে না যায়।
২) ব্যবহৃত মালামালের অনুপাত যেন সঠিক থাকে।
৩) কিউরিং পিরিয়ড শেষ না হওয়ার পূর্বে কিছুতেই মেঝে ব্যবহার করা উচিৎ হবে না।
অনুশীলনী
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। মোজাইক কাকে বলে?
২। মোজাইক তৈরির মালামাল কি কি?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। মোজাইকের প্রয়োজনীয়তা লেখ।
২। মোজাইক কাজের সাবধানতা সম্পর্কে লেখ।
৩। মোজাইক কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও ব্যবহার সম্পর্কে লেখ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। মোজাইক তৈরির মালামালের অনুপাত লেখ। মোজাইক কাজের অবস্থান সম্পর্কে লেখ।
আরও দেখুন :