সিভিল কন্সট্রাকশনের সিমেন্ট I অধ্যায় ৫ I সিভিল কন্সট্রাকশন-১

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় সিভিল কন্সট্রাকশনের সিমেন্ট । শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

 

সিভিল কন্সট্রাকশনের সিমেন্ট I অধ্যায় ৫ I সিভিল কন্সট্রাকশন-১

 

সিভিল কন্সট্রাকশনের সিমেন্ট

সিমেন্ট কংক্রিটের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কংক্রিটের গুণগতমান রক্ষায় সিমেন্ট বাইন্ডিং উপাদান হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য নির্মাণকাজে সিমেন্টের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ অধ্যায়ে সিমেন্ট সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

সিমেন্ট

সাধারণ অর্থে সিমেন্ট হচ্ছে এমন একটি বস্তু যা নির্মাণসামগ্রীতে বন্ধন বা সংযোজন তৈরি করে। এক প্রকার পাথর যার মধ্যে কাদা, চুন এবং ম্যাগনেসিয়ামের কার্বনেট থাকে, একে পুড়িয়ে এবং গুঁড়া করে প্রাকৃতিক সিমেন্ট (রোমান সিমেন্ট) পাওয়া যায়। এতে কাদার পরিমাণ শতকরা ২০ থেকে ৩০ ভাগ থাকে। প্রাকৃতিক সিমেন্ট অনেকটা তরল চুনের সদৃশ। এটা কৃত্রিম সিমেন্টের মতো তত শক্তিশালী নয় সেজন্য এর ব্যবহার সীমিত।

নির্দিষ্ট অনুপাতের ক্যালক্যারিয়াস (calcium carbonate) এবং আরজেলেসিয়াস (composed primarily of clay or shale; clayey) সামগ্রী অতি উচ্চ ভাপে পুড়িয়ে কৃত্রিম সিমেন্ট পাওয়া যায়। পুড়ানো অংশকে ক্লিংকার বলে। ক্লিংকারের সাথে সামান্য পরিমাণ জিপসাম মেশানো হয় এবং গুঁড়া করে পাউডার বানানো হয় যা সিমেন্ট নামে পরিচিত। ইংল্যান্ডে ১৮২৪ সালে জোসেফ আসপডিন নামক একজন রাজমিস্ত্রি প্রথম সিমেন্ট আবিষ্কার করেন। কৃত্রিম সিমেন্টের সবচেয়ে সাধারণ জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত প্রকার হচ্ছে সাধারণ জমাট বাঁধা (normal setting cement) বা সাধারণ সিমেন্ট বা পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (Portland cement)।

ভালো মানের সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের (Portland Cement) বা CEM-I এর মধ্যে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড BDS EN 197-1:2003 অনুসারে নিম্নলিখিত উপাদান থাকবে

১. লাইম (cao)                        ৬২%

২. সিলিকা (Sio2)                  ২২%

৩. এলুমিনা                               ৫%

৪. ক্যালসিয়াম সালফেট      ৪%

৫. আয়রন অক্সাইড             ৩%

৬. ম্যাগনেসিয়া                      ২%

৭. সালফার                              ১%

৮. এলকালিস                          ১%

 

সিভিল কন্সট্রাকশনের সিমেন্ট I অধ্যায় ৫ I সিভিল কন্সট্রাকশন-১

 

বিভিন্ন প্রকার সিমেন্টের নাম

১। পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (Portland Cement-PC)

২। পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্ট (PCC)

৩। এসিড রেজিসটেন্ট (প্রতিবন্ধক) সিমেন্ট

৪। ব্লাস্ট ফারনেস (বার্তা চুলি) সিমেন্ট

৫। কালারড (রং মিশ্রিত) সিমেন্ট

৬। এক্সপান্ডিং (বর্ধনশীল) সিমেন্ট

৭। উচ্চ এমোনিয়া সিমেন্ট

৮। হাইড্রোফোবিক (পানি বিকর্ষী) সিমেন্ট

৯। কম হিট (তাপ) সিমেন্ট

১০। পোজলোনা সিমেন্ট

১১। কুইক সেটিং (দ্রুত জমাট বাঁধা) সিমেন্ট

১২। র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট

১৩। সালফেট রেজিসটেন্ট সিমেন্ট

১৪। হোয়াইট সিমেন্ট

সিমেন্টের গুণাগুণঃ

সিমেন্টের গুণাগুণ দুই প্রকার। যথা: ১. রাসায়নিক ২. ভৌত

রাসায়নিক গুণাগুণ: মূলত রাসায়নিক গুণাগুণের উপরই সিমেন্টের ভৌত গুণাগুণ নির্ভর করে। সুতরাং এর রাসায়নিক উপাদান এবং পানির সাথে বিক্রিয়া জানা খুবই জরুরি।

হাইড্রেশন (Hydration)

যখন পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের সাথে পানি মেশানো হয়, তখন এর রাসায়নিক উপাদানসমূহ অনেকগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে যা সিমেন্টকে শক্ত করে। পানির সাথে এই রাসায়নিক বিক্রিয়াকে হাইড্রেশন বলে। এ বিক্রিয়াগুলো বিভিন্ন সময় এবং হারে সংঘটিত হয়। সবগুলো বিক্রিয়ার উপর নির্ভর করে পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট কিভাবে শক্ত হবে এবং শক্তি সঞ্চয় করবে।

ট্রাইক্যালসিয়াম সিলিকেট: দ্রুত পানির সাথে বিক্রিয়া করে এবং শক্ত হয় এবং প্রাথমিক জমাট বাঁধা ও শক্তি সঞ্চয়ে দায়ী।

ডাইক্যালসিয়াম সিলিকেট: ধীরে ধীরে পানির সাথে বিক্রিয়া করে এবং শক্ত হয় এবং এক সপ্তাহ পর জমাট বাঁধা ও শক্তি সঞ্চয়ে দায়ী।

ট্রাইক্যালসিয়াম এলুমিনফিরেট: খুব দ্রুত পানির সাথে বিক্রিয়া করে কিন্তু খুব কম শক্তি দেয়। এটা সিমেন্টের রং আনে এবং মিশ্রণের তাপমাত্রা কমিয়ে রাখে।

ভৌত গুণাগুণ: সিমেন্টের ভৌত গুনাগুণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ASTM C ১৫০ মান সিমেন্টের জন্য কিছু ভৌত গুণাগুণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। সেগুলো হলো:

১। ফাইননেস (fineness) বা সূক্ষ্মতা

২। কনসিসটেনসি (consistency)

৩। সেটিং টাইম (setting time) বা জমাট বাঁধার সময়

৪। কমপ্রেসিভ স্ট্রেন্থ (compressive strength)

৫। হিট অব হাইড্রেশন (heat of hydration)

৬। আপেক্ষিক গুরুত্ব (specific gravity)

৭। লস অব ইগনেশন (loss of ignation)

 

Google_news_logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

১। ফাইননেস (Fineness) বা সূক্ষ্মতা: ফাইননেস বা সিমেন্টের দানার আকার হাইড্রেশনের হার এবং শক্তি সঞ্চয়ের হারকে প্রভাবিত করে। দানার আকার যত ছোট হবে পানি সিমেন্ট বিক্রিয়া তত বেশি হবে এবং বেশি শক্তি সঞ্চয় হয়। সূক্ষ্মতা সিমেন্টে জিপসাম মেশানোর উপর নির্ভরশীল। প্রথম সাত দিনের মধ্যে সিমেন্টের শক্তিতে সূক্ষ্মতার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।

২। সাউন্ডনেস (Soundness) বা নিখুঁততা: সাউন্ডনেস শক্ত সিমেন্ট পেস্টের সেই ক্ষমতাকে বোঝায় যা জমাট বাঁধার পর এর আয়তন বৃদ্ধি ধরে রাখে। অতিরিক্ত পরিমাণে মুক্ত চুন (lime) বা ম্যাগনেসিয়াম (magnacium) সিমেন্ট পেস্টের সেট হওয়ার পর ক্ষতিকর আয়তন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। আদর্শ অটোক্লেভ এক্সপানশন টেস্টের মাধ্যমে সিমেন্টের সাউন্ডনেস টেস্ট করা হয়।

৩। সেটিং টাইম (Setting Time): সিমেন্ট পেস্টের সেটিং টাইম অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন-সিমেন্টের ফাইননেস, পানি-সিমেন্ট অনুপাত, রাসায়নিক উপাদান (জিপসাম) এবং এডমিক্সার। নির্মাণকাজের জন্য প্রাথমিক সেট খুব দ্রুত এবং চূড়ান্ত সেট বেশি দেরি হওয়া উচিত নয়। প্রাথমিক সেটঃ যখন
সিমেন্ট পেস্ট তুলনামূলক শক্তি সঞ্চয় (stiffen) শুরু করে।

৪। চুড়ান্ত সেট: যখন সিমেন্ট পেস্ট এই পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করে যে এটা অল্প পরিমাণ ভার বহন করতে পারে।

৫। (strength): সিমেন্ট পেস্টের স্ট্রেস্থ তিনভাবে প্রকাশ করা হয়: কমপ্রেসিভ (চাপ), টেনসাইল (টান) এবং ফ্লেক্সসারেল। বিভিন্ন বিষয় যেমন- পানি-সিমেন্ট অনুপাত, সিমেন্ট ফাইন এগ্রিগেট অনুপাত, ফাইন এগ্রিগেটের প্রকার এবং গ্রেডিং, মিকসিং-এর ধরন এবং মোল্ডিং, কিউরিং, স্পিসিপেনের আকার আকৃতি, পানির পরিমান, ভার এবং সময়। যেহেতু সিমেন্ট সময়ের সাথে সাথে শক্তি অর্জন করে তাই স্ট্রেস্থ টেস্টের সময় নির্দিষ্ট করা জরুরি। যেমন- ১ দিন (হাই আরলি স্ট্রেন্থ সিমেন্ট), ৩ দিন, ৭ দিন, ২৮ দিন এবং ৯০ দিন।

সিমেন্ট মর্টারের স্ট্রেন্থ সরাসরি কংক্রিটের স্ট্রেন্থের সাথে সম্পর্কিত নয়। স্ট্রেন্থ টেস্ট সিমেন্ট মর্টারের উপর করা হয় সিমেন্ট পেস্টের উপর করা হয় না। কমপ্রেসিভ স্ট্রেস্থ ৩ দিন পর ১১৫ কেজি/সেমিং এবং ৭ দিন পর ১৭৫ কেজি/সেমি এর চেয়ে কম হবে না। টেনসাইল স্ট্রেস্থ ৩ দিন পর ২১ কেজি/সেমি এবং ৭ দিন পর ২৬ কেজি/সেমি এর চেয়ে কম হবে না। মূলত সিমেন্ট কম্প্রেসিভ স্ট্রেন্থে ক্ষমতাবান কিন্তু টেনসাইল স্ট্রেন্থে দুর্বল। ফ্লেক্সসারাল স্ট্রেস্থ মূলত বেন্ডিং-এ টেনসাইল স্ট্রেন্থ-এর পরিমাণ।

৬। হিট অব হাইড্রেশন: হিট অব হাইড্রেশন হচ্ছে পানি এবং সিমেন্টের বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন তাপ। সিমেন্টের ট্রাইক্যালসিয়াম সিলিকেট এবং ট্রাইক্যালসিয়াম এলুমিনেট দ্বারা হিট অব হাইড্রেশন সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় এবং পানি-সিমেন্ট অনুপাত, সূক্ষ্মতা এবং কিউরিং তাপমাত্রা দ্বারাও প্রভাবিত হয়। মূলত হিট অব হাইড্রেশন শীতকালে উপযুক্ত কিউরিং তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

৩। আপেক্ষিক গুরুত্বঃ মিশ্রণ অনুপাত হিসাবের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের জন্য এর মান ৩.১৫ এবং ব্লাস্ট ফারনেস স্লাগ ও পেজলোনার জন্য ২.৯ এর কাছাকাছি।

৪। লস অব ইগনেশন: প্রচুর তাপে (৯০০-১০০০°C) সিমেন্টের ওজন হারানোকে লস অব ইগনেশন বলে। বেশি ওজন হারানো প্রিহাইড্রেশন এবং কার্বনেশন নির্দেশ করে যা দীর্ঘ দিন ভালোভাবে সিমেন্ট গুদামজাত না করা বা পরিবহনের সময় পরিবর্তনের কারণে ঘটে।

 

সিভিল কন্সট্রাকশনের সিমেন্ট I অধ্যায় ৫ I সিভিল কন্সট্রাকশন-১

 

বিভিন্ন প্রকার সিমেন্টের ব্যবহার

সিমেন্টের নামব্যবহার
সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টসাধারণ যে কোনো ধরনের নির্মাণকাজে, বিল্ডিং, রাস্তা-ঘাট ইত্যাদি।
কম্পোজিট সিমেন্টসাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের মতো সকল কাজে ব্যবহৃত হয়।
এসিড রেজিসটেন্ট (প্রতিবন্ধক) সিমেন্টরাসায়নিক কারখানায় এসিড এবং তাপ নিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বাস্ট ফারনেস (বার্তা চুলি) সিমেন্ট
সাধারণ সিমেন্টের মতো ব্যবহার হয়। তবে তুলনামূলক দাম কম যেহেতু সিমেন্ট তৈরিতে স্লাগ ব্যবহৃত হয় যা একটি বর্জ্য।
কালারড (রং মিশ্রিত) সিমেন্টফ্লোর, বাইরের দেয়ালে, কৃত্রিম মার্বেল তৈরিতে, জানালার কাজে ব্যবহৃত হয়।
এক্সপান্ডিং (বর্ধনশীল) সিমেন্টপানিরোধক কাঠামো এবং কংক্রিটের মেরামত কাজে ব্যবহৃত হয়।
উচ্চ এমোনিয়া সিমেন্টদ্রুত জমাট বাঁধা এবং শক্তি সঞ্চয়, লবণ/এসিড নিরোধক কাজে ব্যবহৃত হয়।
হাইড্রোফোবিক (পানি বিকর্ষী) সিমেন্টবরফ এবং পানিরোধক কাজে ব্যবহৃত হয়।
কম হিট (তাপ) সিমেন্টকারী কংক্রিট (masa concrete) কাজে ব্যবহৃত হয়।
পোজলোনা সিমেন্টআগুন এবং পানি রোধক কাজে ব্যবহৃত হয় এর টেনসাইল স্ট্রেছ বেশি।
কুইক সেটিং (দ্রুত জমাট বাঁধা) সিমেন্টচলন্ত বা স্থির পানিতে কংক্রিটের কাজে ব্যবহৃত হয়। ৩০ মিনিটের মধ্যেই শক্তি সঞ্চয় করে।
র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট
প্রাথমিক এবং চূড়ান্ত জমাট বাঁধার সময় সাধারণ সিমেন্টের মতো তবে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে, নির্মাণকাজ দ্রুত হয়, সহজে কর্ম ওয়ার্ক খোলা যায়, কিউরিং-এ সময় কম লাগে।
সালফেট রেজিসটেন্ট সিমেন্টক্যানেল (খাল) লাইনিং, কালভার্ট এবং সাইফোন নির্মাণে যেখানে খরভার প্রবণতা বেশি।
হোয়াইট সিমেন্টফ্লোর ফিনিশ, আন্তরের কাজে এবং কারুকার্য বিশিষ্ট কাজে।

সিমেন্টের ফিল্ড টেস্ট প্রণালি

একজন ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারকে অনুমোদিত এজেন্টের কাছ থেকে বিখ্যাত ব্র্যান্ড দেখে সিমেন্ট কেনা উচিত এবং টেস্ট সার্টিফিকেট চাওয়া উচিত। সিমেন্টের গুণগতমান নিশ্চিত করতে সে সাইটে কিছু ফিল্ড টেস্ট করতে পারে। যেমন:-

১) পরীক্ষা করে দেখবে ব্যাগগুলো ফ্রেশ (নতুন) আছে কিনা এবং তাতে মেশিন দ্বারা সেলাই আছে কিনা।

২) সিমেন্টের ব্যাগে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড মার্ক (BSTI) এবং নম্বর ঠিক আছে কিনা। অর্থাৎ CEM বা CEM II এবং BDS EN 197-1:2003

৩) সিমেন্টের ব্যাগে সিমেন্ট তৈরির সপ্তাহ বা মাস, বছর উল্লেখ আছে কিনা।

৪) ব্যাগ খুলে ভালো মতো দেখতে হবে কোনো পিও (lumps) থাকলে তা ভালো সিমেন্ট নয়। (চিত্র ৫.৪)

৫) সিমেন্টের রং একই রকম।

৬) সিমেন্টের রং ধূসর না হয়ে লাল বা কালচে হলে বুঝতে হবে অপদ্রব্য মেশান আছে।

৭) দুই আঙুলের মাঝে নিয়ে ঘষলে সিল্কি মনে হলে ভালো সিমেন্ট।

৮) সিমেন্টের বস্তার ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিলে ঠান্ডা অনুভূত হলে ভালো সিমেন্ট।

৯) নাকে শুকলে মাটি বা পলি থাকলে গন্ধ পাওয়া যাবে।

১০) কিছু সিমেন্ট নিয়ে পেস্ট তৈরি করে একটি কাচের প্লেটের উপর রেখে বর্গাকৃতির আকার দিতে হবে। পরে একে আস্তে আস্তে কোনো বালতির ভিতর ডুবিয়ে ২৪ ঘন্টা পর দেখতে হবে কোনো আকার পরিবর্তন বা ফাটল ধরেছে কি না। যদি আকার ঠিক থাকে বুঝতে হবে ভালো সিমেন্ট।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment