কাঠের মেঝের চিত্র অঙ্কন

কাঠের মেঝের চিত্র অঙ্কন আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং – ১ [ Civil Engineerng Drawing – 1 ]” এর  “মেঝো বিস্তারিত চিত্র [ ব্যবহারিক ]” অধ্যায় এর পাঠের অন্তর্ভুক্ত।

 

কাঠের মেঝের চিত্র অঙ্কন

 

৬.১ কাঠের মেঝের চিত্র অঙ্কন (Draw timber floor)

নির্মাণপদ্ধতি ঃ প্রথমে কক্ষের দৈর্ঘ্য বরাবর দেওয়ালের উপর ওয়াল প্লেট স্থাপন করা হয়। ওয়াল প্লেটের উপর কক্ষের ব্রিজিং (Bridging joist) বসানো হয়। তারপর কক্ষের দৈর্ঘ্য বরাবর জয়েস্টের উপর ফ্লোর বোর্ডিং (Floor boarding) কে তারকাঁটা আটকানো হয়। যদি কক্ষের আকার অনেক বড় হয় তবে ১.৮ মি. থেকে ২.০ মিটার পর পর স্বল্প উচ্চতায় দেওয়াল নির্মাণ করা হয়। দেওয়ালকে স্লিপার ওয়াল (Sleeper wall) বলে। স্লিপার ওয়ালের পুরুত্ব ১০ সেমি এবং হানিকৰ (Honey comb) যুক্ত গাঁধুনি হয়। আর্দ্রত যাতে উপরে উঠতে না পারে, তার জন্য সমগ্র মেঝেতে ১৫ সেমি পুরুত্বের সিমেন্ট কংক্রিট এর ঢালাই দেওয়া হয়। অপরদিকে, যেন এবং কংক্রিট বেসের মধ্যে ফাঁকা স্থানকে শুষ্ক এবং বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য ভূমিতল থেকে কিছু উপরে Air brick এর সাহার গাঁথুনি করা হয়।

নিম্নে কাঠের গ্রাউন্ড ফ্লোর এর চিত্র দেওয়া হলো ঃ

 

কাঠের মেঝের চিত্র অঙ্কন

 

৬.২ এক স্তর ব্রিক ফ্লাট সোলিং এর উপর আদর্শ সিসি মেঝের চিত্র অঙ্কন (Draw the typical cement concreat (CC) floor over single brick flat soling) : 

সিমেন্ট কংক্রিট মেঝে তিনটি ধাপে তৈরি করা হয় :

(ক) সাব-বেস প্রস্তুতকরণ ঃ ফ্লোরিং এর নিমিত্তে নির্বাচিত মাটি দ্বারা প্রথমে ভরাট করা হয়। ভরাটকৃত মাটিকে পানি সহযোগে দৃঢ়বদ্ধ ও সমতল করা হয় । যদি মাটি খুবই দুর্বল ধরনের হয়, তবে বেশি গভীরতায় মাটি ভরাট করতে হয় এবং ভাঙা ইটের টুকরা বা রাবল বোল্ডার সহযোগে ভালোভাবে দুশ করে দৃঢ়বদ্ধ করা হয়। এ স্তরের পুরুত্ব ২৫ সেমি এর মতো হয়ে থাকে। এভাবে সাববেস প্রস্তুত করা হয়। আর মাটির অবস্থা ভালো হলে প্রথমে মাটি ভরাট করে দৃঢ়বদ্ধ করার পর ১০ থেকে ১৫ সেমি পুরুত্বে বালি ভরাট করতে হয়। তারপর ভালোভাবে দুর্মুর্শ করে দৃঢ়বদ্ধ করা হয়। 

(খ) বেস প্রস্তুতকরণ ঃ বেসের পুরুত্ব ৭.৫ সেমি থেকে ১০ সেমি হয়ে থাকে। ১: ৩ : ৬ বা ১ : ৫ : ১০ অনুপাতের সিমেন্ট কংক্রিট অথবা লাইম কংক্রিট বিছিয়ে বেস প্রস্তুত করা হয়। লাইম কংক্রিটের ক্ষেত্রে ৪০% লাইম মর্টারে ১ ভাগ লাইম ও ২ ভাগ বালি (১ : ২) বা ১ ভাগ লাইম, ১ ভাগ সুরকী ও । ভাগ বালি (১ : ১ : ১) এবং ৬০% কোর্স অ্যাগ্রিগেট থাকবে, যার আকার ৪০ মিমি। ভালোভাবে কিউরিং করতে হয়। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে বেস কোর্স হিসাবে ব্রিক ফ্লাট সোলিং ব্যবহার করা হয়।

(গ) টপিং বা ওয়্যারিং সারফেস ঃ কংক্রিট বেস ভালোভাবে শক্ত হওয়ার পর ব্রাশ দ্বারা ভালোভাবে পরিষ্কার করে পানি দ্বারা ভিজিয়ে রাখতে হয়। উত্তমরূপে ভিজানো শেষ হলে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করতে হবে। তারপর কাঠের ব্যাটেন বা গ্লাস বা প্লেইন অ্যাসবেস্টস এর সাহায্যে বর্গাকার বা আয়তাকার প্যানেলে বিভক্ত করতে হবে। প্যানেলের দৈর্ঘ্য ২.৪০ মিটারের বেশি হবে না। আর প্যানেলের ক্ষেত্রফল ৫.৫ বর্গমিটারের বেশি হবে না। প্যানেলের আকার ১ মি × ১ মি, ২ মি × ২ মি বা ১ মি × ২ মি হওয়া উচিত । তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্যানেলের আকার ১.২০ মি × ১.২০ মি হয়ে থাকে।

প্রথমে অলটারনেট প্যানেলগুলোর টপিং এর জন্য ১ : ২ : ৪ অনুপাতের সিমেন্ট কংক্রিট দ্বারা ঢালাই করা হয়। টপিং এর পুরুত্ব ২৫ মিমি থেকে ৪০ মিমি এর মধ্যে হয়। ঢালাই এর পূর্বে সিমেন্টের স্লারি (Slurry) দ্বারা গ্রাউটিং করে নিতে হয় যেন বেস এবং টপিং পরস্পরকে আবদ্ধ করে রাখতে পারে। আচ্ছাদিত ঢালাই কিছুটা শক্ত হলে নিট সিমেন্ট ফিনিশিং করা হয়। প্রাথমিক সংকোচন শেষে অর্থাৎ ৭২ ঘণ্টা পরে বাকি প্যানেলগুলোর কাজ একইভাবে শেষ করা হয়। তারপর ৭ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত কিউরিং করা হয় ।

 

কাঠের মেঝের চিত্র অঙ্কন

 

কাঠের মেঝের চিত্র অঙ্কন

 

৬.৩ আদর্শ আরসিসি মেঝের চিত্র অঙ্কন (Draw the typical reinforced cement concrete (RCC Floors) :

আরসিসি ফ্লোর নিম্নলিখিত প্রকার, যথা—

১। সিম্পল স্ল্যাব ফ্লোরিং (Simple slab flooring)

২। রিইনফোর্সড ব্রিক ফ্লোরিং (Reinforced brick flooring)

৩। বিম-স্ল্যাব ফ্লোরিং (Beam-slab flooring)

৪। ফ্লাট স্ল্যাব ফ্লোরিং (Flat slab flooring)

৫ । রিবড বা হলো টাইল্ড ফ্লোরিং (Ribbed flooring or Hollow tiled flooring)।

নিম্নে বিভিন্ন প্রকার আরসিসি ফ্লোর এর চিত্র দেওয়া হলো ঃ

 

আরসিসি মেঝের চিত্র অঙ্কন

 

আরসিসি মেঝের চিত্র অঙ্কন

 

আরও পড়ুন:

 

Leave a Comment