টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব | অধ্যায়-২৬ | বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স-২

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব যা অধ্যায়-২৬ এর বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স-২ এ অন্তভুক্ত।  শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই।তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষা ম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব সম্পর্কে বর্ণনা

বৈদ্যুতিক বাল্ব বা বাতি বৈদ্যুতিক শক্তিকে আলোক শক্তিতে রূপান্তর করে। ফলে আমরা বৈদ্যুতিক বাতির সাহায্যে অন্ধকার জায়গাকে আলোকিত করতে পারি।

বৈদ্যুতিক বাতিকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা- 

১) ফিলামেন্ট বাতি 

২) আর্ক বাতি ও 

৩) গ্যাস ডিসচার্জ বাতি।

 

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব
চিত্র: বৈদ্যুতিক বাল্ব

সাধারণ বান্ধের তুলনায় টিউব লাইটের সুবিধা ও অসুবিধা

সাধারণ ফিলামেন্ট বাতি দিয়ে আলো দিলে ঘর যত গরম হয়, তত পাওয়ারের ফ্লোরেসেন্ট বাতি ব্যবহার করলে ঘর তার চেয়ে কম গরম হয়। এর কারণ ক্লোরেসেন্ট বাতির কর্মক্ষমতা ফিলামেন্ট বাতির প্রায় তিন গুণ। যখনই কোনো বাতি দিয়ে কারেন্ট যায়, তখনই সেই তড়িৎ শক্তি থেকে আলোক রশ্মি আর তাপ উৎপন্ন হয়। প্রতি ওয়াট তড়িৎ শক্তির খরচে ফিল্যামেন্ট বাতি থেকে যে পরিমাণ তাপ আর আলোক রশ্মির উৎপত্তি হয়, ক্লোরেসেন্ট বাতিতে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ

 

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব
চিত্র : বৈদ্যুতিক বাল্ব

আলোক রশ্মির উৎপত্তি হয়। সুতরাং এই বাতিতে তাপ উৎপন্ন হয় কম। কাজেই একই ওয়াটের বাতি ব্যবহার করলে ফ্লোরেসেন্ট বাতি ফিলামেন্ট বাতির চেয়ে লাইন থেকে কম ওয়াট পাওয়ার টানে। তবে এ বাতি থেকে যে রংয়ের আলো বের হয় তা ফিলামেন্ট বাতির আলোর রংয়ের চেয়ে ভিন্ন। 

সূর্যের আলোর রংই আমাদের চোখে সবচেয়ে ভালো লাগে। ফিলামেন্ট বাতির রং সেই সূর্যের আলোর রংয়ের মত হলদেটে বলে ফ্লোরেসেন্ট বাতির যে তিন রকম রং অর্থাৎ ডে-লাইট, ওয়ার্ম হোয়াইট বা ন্যাচারাল, তা কৃত্রিম বলে মনে হয়। তাছাড়া এসি ফ্লোরেসেন্ট আলোতে উদ্ভাসিত যেসব জায়গায় মেশিনে কাজ হয়, তেমন জায়গায় ঘুরন্ত মেশিনের ঢাকাকে ঐ সব মেশিন প্রকৃত যত জোরে ঘুরাচ্ছে তার চেয়ে যেন কম জোরে ঘুরছে বলে মনে হয়।

একে ইংরেজিতে স্ট্রেবোসকোপিক এফেক্ট বলে। বাংলায় একে ‘বিচ্ছিন্ন দর্শন প্রভাব’ বলা যেতে পারে। এটা একটা অসুবিধা। সাধারণত এই বাতি দোকান ঘর, কারখানা, সিনেমা হলে প্রভৃতিতে ব্যবহার হয়। আজকাল অনেকে মরেও এ বাতি ব্যবহার করেন। অনেক ফ্লোরেসেন্ট বাক্তির আলোতে রং চেনার ব্যাঘাত হয়।

 

দৈর্ঘ্যের উপর ভিত্তি করে টিউব লাইট-এর শ্রেণিবিভাগ

সাধারণভাবে ২ ফুট বা ০.৬১ মিটার লম্বা ২০ ওয়াট এর, ৪ ফুট বা ১.২২ মিটার লম্বা ৪০ ওয়াট-এর এবং ৫ ফুট বা ১.৫২ মিটার লম্বা ৮০ ওয়াট-এর টিউব-লাইট পাওয়া যায়।

 

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব
চিত্র : বৈদ্যুতিক টিউবলাইট

টিউব লাইট সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় মালামালের তালিকা

টিউব লাইট সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় মালামালের তালিকা নিম্নরুপ: 

১) ফ্লোরোসেন্ট হোল্ডার 

২) চোক কয়েল 

৩) স্টার্টার 

৪) স্ট্যান্ড

 

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব
চিত্র: টিউবলাইটের বিভিন্ন অংশ

চোক করেল ও স্টার্টার-এর প্রয়োজনীয়তা

ৰাতি ফুলবার সময় তাতে প্রবাহিত কারেন্টের পরিমাণ যাতে উত্তরোত্তর বেড়ে না যায় তার জন্য একটি লোহার ‘কোরের’ উপর জড়ানো কয়েল যোগ করা। একে ইংরেজিতে চোকিং কয়েল বলে, চলতি কথায় ব্যালাস্ট বলে। এটা সাপ্লাই লাইনের দিকে বাতির সঙ্গে সিরিজে থাকে। চোকিং কয়েল লাগানোর মূল কারণ হলো গ্যাস যত গরম হয় ততই তার ভিতর দিয়ে কারেন্ট বেশি সহজে বইতে পারে, অর্থাৎ গ্যাস যত গরম হয় তার রেজিস্ট্যান্স তত কমে যায়। সুতরাং বাতি যত বেশিক্ষণ ধরে জ্বলতে থাকে, কারেন্ট একটু একটু করে বাড়তে আরম্ভ করে এবং গ্যাসের উত্তাপ-এ গলে যায়। চোক কয়েল বা ব্যালাস্ট তা হতে দেয় না।

 

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব
চিত্র: টিউবলাইটের বিভিন্ন অংশ

যেহেতু ঠাঙ্গ ইলেকট্রোড আর ঠান্ডা গ্যাস দিয়ে কারেন্ট যায় না, তাই তার ইলেকট্রোড দুটো দিয়ে অতি অল্প সময়ের জন্য এমন কারেন্ট পাঠাতে হবে যাতে ক্ষণমধ্যেই তা গরম হয়ে ওঠে, আর ইলেকট্রন বিচ্ছুরিত হতে থাকে। এ কাজ করতে গেলে ইলেকট্রোড দুটোকে শর্ট সার্কিট করতে হয়। কিন্তু যে মুহূর্তে ইলেকট্রোড গরম হয়ে ওঠে আর তা থেকে ইলেকট্রন বের হতে থাকে, তখনই শর্ট সার্কিট ভেঙে দিতে হয়। এর জন্য এমন একটা স্টার্টার দিতে হয় যা স্বয়ংক্রিয় ভাবে কাজ করে। একে স্টার্টিং ডিভাইস বা স্টার্টার বলে। 

একটি সুইচ দিয়ে নিয়ন্ত্রণযোগ্য টিউব লাইট সংযোজনের সার্কিট

 

টিউব লাইটসহ বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বাল্ব
চিত্র : টিউব লাইট সংযোজনের সার্কিট।

 

অনুশীলনী-২৬ 

অতি সংক্ষিপ্ত: 

১। বৈদ্যুতিক বাল্ব কাকে বলে? 

২। চোক কয়েল কাকে বলে? 

৩। স্টার্টার কাকে বলে? 

সংক্ষিপ্ত: 

১। বৈদ্যুতিক বাতি কত প্রকার ও কী কী? 

২। দৈর্ঘ্যের উপর ভিত্তি করে টিউব লাইট-এর শ্রেণিবিভাগ লেখ। 

৩। টিউব লাইট সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় মালামালের তালিকা লেখ। 

৪। চোক কয়েল ও স্টার্টার-এর প্রয়োজনীয়তা লেখ। 

 

Google_news_logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

রচনামূলক: 

১। সাধারণ বাল্বের তুলনায় টিউব-লাইটের সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা কর। 

২। চিত্রসহ একটি সুইচ দিয়ে নিয়ন্ত্রণযোগ্য টিউব-লাইট সংযোজনের সার্কিটের বর্ণনা কর।

আরও দেখুন :

Leave a Comment