আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – পানির ট্যাংক যা অধ্যায়-১০ এর বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স-২ এ অন্তভুক্ত। শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই।তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষা ম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।
Table of Contents
পানির ট্যাংক
পানির ট্যাংক-এর সংজ্ঞা
পানি সংরক্ষণের জন্য বা যে কোনো জরুরি বা আপদকালীন সময়ে পানি পেতে একটি নির্দিষ্ট স্থানে পানিকে জমা করে রাখা হয়। এই নির্দিষ্ট স্থানকে পানির ট্যাংক (Water Tank) বলে। অনেক সময় সরবরাহকৃত পানির চেয়ে চাহিদার পরিমাণ বেশি হয়। তাই পানিকে ট্যাংকে জমা করে রাখা হয়। ট্যাংক কংক্রিট, ইস্পাত, মাটি বা ইটের গাঁথুনি ফেরোসিমেন্ট এবং প্লাস্টিকের হয়।

পানির ট্যাংকের প্রকারভেদ
পানির ট্যাংককে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১। আবদ্ধ জলধারা (Imponding reservoir)
২। বণ্টন জলাধার (Distribution reservoir)
বণ্টন জলাধারকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১। ভূগর্ভস্থ জলাধার,
২। উত্তোলিত বা ওভারহেড জলাধার
ওভারহেড ট্যাংক (Overhead reservoir)
ওভারহেড চৌবাচ্চা বা জলাধার মাটি হতে প্রয়োজনীয় উচ্চতায় তৈরি করা হয়। এটা আরসিসি-এর তৈরি হয়ে থাকে এবং খুঁটি ও বিমের উপর দন্ডায়মান থাকে। সাধারণত কেন্দ্রীয় ট্যাংকের পানি ধারনক্ষমতা ২.৫-৬ লক্ষ লিটার এবং গভীরতা ৩.৫-৬ মিটার স্থানীয়ভাবে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন মাপের হয়ে থাকে। নগরীর এলাকাভিত্তিক Overhead reservoir থাকে। এছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের আবাসিক প্রকল্পে অফিসের পানির প্রয়োজন মিটানোর জন্য ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান Overhead reservoir তৈরি করে।
একক বাড়ির- ছাদে ব্যক্তিগতভাবে পানি সংরক্ষণের জন্য Overhead reservoir তৈরি করা হয়। ব্যক্তিগত Overhead reservoir ফেরোসিমেন্ট, RCC, প্লাস্টিকের এবং টিনের তৈরি হয়। সচরাচর মার্কেটে ৩০০০ লিটার, ৫০০০ লিটার পর্যন্ত Overhead tank পাওয়া যায়।

ওভারহেত ট্যাংকের শ্রেণিবিভাগ
নির্মাণ উপকরণের উপর ভিত্তি করে ওভারহেড ট্যাংক নিম্নলিখিত প্রকারে হয়ে থাকে।
১। আরসিসি ট্যাংক।
২। ফেরো সিমেন্ট ট্যাংক।
৩। জিআই শিট ট্যাংক।
৪। প্লাস্টিক ট্যাংক।
৫। ইটের তৈরি ট্যাংক।
৬। পিভিসি ট্যাংক।
৭। ইউপিভিসি ট্যাংক।

আন্ডারগ্রাউন্ড ও ওভারহেড ওয়াটার ট্যাংক-এর পার্থক্য
আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার ট্যাংক | ওভারহেড ওয়াটার ট্যাংক |
আন্ডারপ্রাউন্ড ট্যাংক মাটি হতে নিচে তৈরি করা হয়। | ওভারহেড ট্যাংক মাটি হতে প্রয়োজনীয় উচ্চতায় তৈরি করা হয়। |
এটা নির্মাণের কারণ এতে পানি সঞ্চয় করে রাখা | বহুতল বিশিষ্ট দালানে নিয়মিত পানি সরবরাহের জন্য ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণ করা হয়। |
পানি মজুদ করে রাখলে এই মজুদ পানি ব্যবহার করতে অভিকর্ষীয় বলের মাধ্যমে বণ্টন এলাকায় সরবরাহ করা যায় না এবং পাম্পের প্রয়োজন হয়। | পানি মজুদ করে রাখলে এই মজুদ পানি সহজেই অভিকর্ষীয় বলের মাধ্যমে বণ্টন এলাকায় সরবরাহ করা যায় এবং কোনো পাম্পের প্রয়োজন হয় না। |
অনুশীলনী – ১০
অতি সংক্ষিপ্ত:
১। পানির ট্যাংক কাকে বলে?
২। পানির ট্যাংককে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
সংক্ষিপ্ত:
১। আন্ডারগ্রাউন্ড ও ওভাহেড ওয়াটার ট্যাংক-এর পার্থক্য লেখ।
২। পানির ট্যাংক কত প্রকার ও কী কী?
রচনামূলক:
১। ওভারহেত ট্যাংকের শ্রেণিবিভাগ বর্ণনা কর।
২। আন্ডারগ্রাউন্ড ও ওভারহেড ওয়াটার ট্যাংক এর পার্থক্য নিরূপণ কর।
আরও দেখুন :