পানির ট্যাঙ্ক | অধ্যায়-১২ | সিভিল কন্সট্রাকশন ২

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – নিষ্কাশন নালা যা অধ্যায়-১২ এর সিভিল কন্সট্রাকশন ২ এ অন্তভুক্ত। শিক্ষাক্রম উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকসমূহ পরিবর্তনশীল চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।

অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগী হওয়াসহ উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হবে। ফলে রূপকল্প- ২০২১ অনুযায়ী জাতিকে বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রশিক্ষিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে আমরা উজ্জীবিত।

পানির ট্যাঙ্ক

পানির ট্যাঙ্ক

সুপেয় পানি সর্ব প্রথমে একটি নির্দিষ্ট সঞ্চয়াপারে জমা করে পরে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের সঞ্চয়াপার (storage) কে ডিস্ট্রিবিউশন স্টোরেজ ট্যাঙ্ক বলে। পানির ট্যাঙ্ক কংক্রিট, ইটের পাঁধুনি, ইস্পাত, ফেরোসিমেন্ট, পি ভি সি বা প্লাস্টিক ইত্যাদি বন্ধু হারা নির্মিত হতে পারে। পানি সরবরাহ করার জন্য ব্যবহৃত ট্যাঙ্ক দু প্রকার। যথা-

১) ওভার হেড ট্যাঙ্ক (Overhead tank)

২) ভূ-গর্ভস্থ ট্যাঙ্ক (Under ground tank)

১) ওভার হেড ট্যাঙ্ক দুই প্রকার। যথা-

ক) দণ্ডায়মান টাইপ

খ) উত্তোলিত চৌবাচ্চা

 

পানির ট্যাঙ্ক
চিত্রঃ ওভার হেড ট্যাঙ্কের ছবি।

ওভার হেড ট্যাঙ্ক ও ভূ-গর্ভস্থ ট্যাঙ্ক এর ব্যবহার

ট্যাঙ্ক সরাসরি মাটির নিচে এবং মাটির উপরে কোন কাঠামো নির্মাণ করে স্থাপন করা যায়। এসের আকার ও আকৃতি প্রয়োজনমতো হবে। সাটির নিচের ট্যাঙ্ক ইটের গাঁধুনী বা কংক্রিটের এবং মাটির উপরের ট্যাংঙ্গ আর সি সি, ফেরোসিমেন্ট বা প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিটের হতে পারে। বর্তমানে জি আই শিটের, স্টিলের অল্পধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাঙ্ক প্রচুর ব্যবহার হচ্ছে।

নিম্নে ওভার হেড ও আন্ডার গ্রাউন্ড ওয়াটার ট্যাঙ্কের ব্যবহার উল্লেখ করা হলো।

১) সরবরাহ ব্যবহারকারীর চাহিদা থেকে কম হলে নিয়ন্ত্রিত করে পানি সরবরাহ করা।

২) অগ্নিকান্ড, পাম্প বিকল হওয়া কিংবা বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে আপদকালীন জরুরি পানি সরবরাহ করা।

৩) উর্দু অঞ্চলে পানি সরবরাহ করার জন্য ওভার হেড ট্যাংঙ্ক ব্যবহার করা হয়।

৪) ওভার হেড ট্যাংঙ্ক পানি মওজুদ করে অভিকর্ষণের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। ফলে পাম্প ব্যবহারের খরচ বাঁচানো যায়।

৫) আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাঙ্কে পানি দীর্ঘক্ষণ জমা থাকার ফলে ভাসমান ময়লা বা পলি (যদি থাকে) থিতিয়ে পড়তে সুযোগ পায়।

৬) ওভার হেড ট্যাংঙ্ক পানি জমা করে একই সময় সরবরাহ করলে ব্যবহারকারীদের যথেষ্ট পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করা যায়।

৭) কোন নির্দিষ্ট এলাকার ইমারতে পানি সরবরাহ করার জন্য ওয়াসা থেকে প্রাপ্ত বা নিজ উদ্যোগে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে প্রথমে ভূ-গর্ভস্থ ট্যাঙ্ক জমা করা যায়। পরে জমাকৃত পানি পাম্পের সাহায্যে বিল্ডিং এর উপর অবস্থিত ট্যাঙ্ক সরবরাহ করা হয়। ট্যাঙ্ক থেকে নির্দিষ্ট বিভরণি পদ্ধতির মাধ্যমে বাসায় বাসায় পানি পৌছে দেওয়া যায়।

ওভার হেড ট্যাংঙ্ক ও ভূ-গর্ভস্থ ট্যাংক এর নকশা পাঠ

 

পানির ট্যাঙ্ক
চিত্রঃ ওভার হেড ট্যাঙ্ক

 

পানির ট্যাঙ্ক
চিত্রঃ ভূ-গর্ভস্থ ট্যাঙ্ক এর সম্মুখ দৃশ্যের সেকশন।

ওয়াটার ট্যাংঞ্চে পাইপ সংযোগ পদ্ধতি

ইমারতের ছাদে রক্ষিত ওয়াটার ট্যাঙ্কে পাইল সংযোগ ও তার নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে বা কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরও করা যায়। সাধারণত ট্যাঙ্কে পানি সরবরাহ এবং সরবরাহকৃত পানি ব্যবহার স্থানে পৌছানোর জন্য চার ধরনের পাইপ স্থাপন করতে হয়। যেমন আগমন বা পানি প্রবেশ পাইপ, নির্গমন পাইপ, উপচানো পাইপ এবং ধৌতকরণ পাইপ। উপচানো পাইপ ও যৌতকরণ পাইপকে ট্যাঙ্কের নিচ দিকে এনে একত্রে সংযোজন করা হয়।

প্রতিটি পাইপে পানি প্রবেশ বা বাহির না হওয়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভাজ থাকে। প্রবেশ পাইল ট্যাঙ্কের উপর দিয়ে এবং নির্গমন পাইপ নিচ দিয়ে স্থাপন করা হয়। উপচানো পাইপ দিয়ে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায় এবং এর মাথা বা মুখ সর্বোচ্চ পানি লেভেলের প্রায় কাছাকাছি থাকে। ধৌত করার সময়ও এ পাইপ ব্যবহার করা হয়। ধৌতকরণ পাইপের মুখ এমনভাবে স্থাপন করা হয় যাতে ধৌত করার পর ট্যাঙ্কে পানি অবশিষ্ট না থাকে।

ওয়াটার ট্যাঙ্কের রক্ষণাবেক্ষণ

নিজে ওয়াটার ট্যাঙ্কের রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো। যথা

১) ট্যাঙ্কের বাহিরের দিকে রং বা অনুমোদিত পদার্থের প্রলেপ ব্যবহার করে আবহাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

২) ট্যাঙ্কের ভিতরে দীর্ঘদিন একনাগাড়ে পানি জমা না রেখে মাকে মাকে খালি করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে অনুমোদিত রাসায়নিক দ্রব্য যেমন- ক্লোরিন ব্যবহার করা যাবে।

৩) ট্যাঙ্কের সাথে সংযোগ পাইপগুলোর জোড়াস্থলে যেন পানি চুয়াতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪) ব্যবহৃত পাইপসমূহ ধাতু নির্মিত হলে তাতে রং এর প্রলেপ দেওয়া যেতে পারে।

৫) ট্যাঙ্কের ভিতেরের দেয়াল আরসিসি নির্মিত হলে ওয়াটার প্রুফিং কোটিং দেয়া উচিত।

৬) ট্যাঙ্ক ছাদ থেকে এতটুকু উঁচুতে নির্মিত হওয়া উচিত যাতে এর নিচে ভালোমতো পরিষ্কার করা যায়। ৭) ট্যাঙ্কের দেয়াল ইট নির্মিত হলে এর প্লাস্টার যাতে খসে না পড়ে তা খেয়াল রাখতে হবে। অনেক সময় রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে বটলাছ বা আগাছা জন্ম নেয় দেয়ালকে তখা ট্যাঙ্ককে আরও কতিগ্রস্থ করে।

৮) ট্যাঙ্কের দেয়াল বা জন্য কোন স্থানে কোন ফাটল দেখা দিলে সাথে সাথে সেরামত করতে হবে।

 

Google_news_logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

অনুশীলনী

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১। স্টোরেজ ট্যাংঙ্ক কাকে বলে? ২। ট্যাঙ্ক কত প্রকার ও কি কি।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১। ওয়াটার ট্যাঙ্কে পাইপ সংযোগ পদ্ধতি সম্পর্কে লেখ। ২। ওয়াটার ট্যাঙ্কের রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি উল্লেখ কর।

রচনামূলক প্রশ্ন

১। ওভার হেড ট্যাঙ্ক ও ভূগর্ভস্থ ট্যাঙ্কের ব্যবহার লেখ।

আরও দেখুন :

Leave a Comment