বিভিন্ন পুরকৌশল সামগ্রী বিষয়ক সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্নোত্তর

আজ আমরা দেখবো বিভিন্ন পুরকৌশল সামগ্রী বিষয়ক সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্নোত্তর।

 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

১। নিম্নলিখিত সংস্থাগুলোর পূর্ণ নাম লেখ।

BSI, ASTM, AASHO, ACI. ASM. ASME. API. SAF

উত্তর: সংস্থাগুলোর পূর্ণ নাম নিচে দেওয়া হলো (1) BSI (British Standard Institute)

(2) ASTM (American Society of Testing & Materials) (3) AASHO (American Association of State Highway Official)

(8) ACI (American Concrete Institute)

(4) ASM (American Society for Metals) (6) ASME (American Society of Mechanical Engineers)

(9) API (American Petroleum Institution)

(৮) SAE (Society of Automotive Engineers) ভালো নির্মাণ সামগ্রীর কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত? ২।

অথবা উত্তম নির্মাণ সামগ্রীর কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা উচিৎ উত্তর : প্রকৌশল সামগ্রীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মাবলি নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

(১) ভৌত ধর্মাবলি (Physical properties) আকার, আকৃতি, ঘনত্ব, স্বচ্ছিন্নতা, সংযুক্তি ইত্যাদি।

(২) যান্ত্রিক ধর্মাবলি (Mechanical properties): শক্তি, স্থিতিস্থাপকতা, নমাতা, অনন্যতা প্রস্তাব কাঠিন্য, খাতসহতা, কাঠিন্য, মহর বিকৃতি ইত্যাদি।

(৩) রাসায়নিক ধর্মাবলি (Chemical properties): ফ্যারোধিতা, অম্লত্ব, ক্ষারত্ব, রাসায়নিক গঠন ইত্যাদি।

(8) বৈদ্যুতিক ধর্মাবলি (Electrical properties) তড়িৎ সঞ্চালন শক্তি, তড়িৎ পরিবহন ক্ষমত

ক্ষমতা ইত্যাদি।

॥ (4) ভাগীয় ধর্ম (Thermal properties) : আপেক্ষিক তাপ, তাপীয় প্রসারণ, তাপ পরিবাহিতা ইত্যাদি। (6) র্ম (Magnetic properties): ভদন শক্তি, চৌম্বকীয় ভেন্যতা, চুম্বকীয় আবেশ, হিস্টিরিসিস ইত্যাদি।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যাটেরিয়ালস্ ৩। যান্ত্রিক প্রকৌশল কাজে কোন প্রকারের সামগ্রী বেশি ব্যবহার করা হয় এবং কেন?

উত্তর : যান্ত্রিক প্রকৌশল কাজে ধাতু ও ধাতু সংকর সামগ্রী বেশি ব্যবহৃত হয়। যেহেতু ধাতু ও ধাতুরী ক

ধর্মাবলি (শক্তি, স্থিতিস্থাপকতা, কাঠিন্য, ঘাতসহনীয়তা ইত্যাদি) যান্ত্রিক, প্রকৌশল যান্ত্রিক প্রকৌশল কাজে এগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

কর্মকাণ্ডের জন্য সর্বাধিক উপযোগী, তাই

(বাকাশিবো ০৬, ‘৮, bl

৪। প্রকৌশল সামগ্রী নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ লিখ। উত্তর : কোনো প্রকৌশল স্ট্রাকচার (Structure) নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর যে গুণাবলি থাকা প্রয়োজন তা হলো সৌন্দর্য, শক্তি, উপযোগিতা ও ব্যয় স্বল্পতার সুসামঞ্জস্য সমাহার। প্রকৌশল সামগ্রী নির্বাচনে সুলভ প্রাপ্যতা, চালনা ও সংযোজন সরলতা, স্থায়িত্ব ও শক্তি ইত্যাদি গুণাবলি বিবেচনা করতে হয়। প্রকৌশলীগণ ইমারত, সড়ক, রেলপথ, সেতু, কালভার্ট, সমুদ্র বন্দর, বিমান বন্দর, জেটি, পোডাশ্রয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, যন্ত্রযান, বাঁধ ইত্যাদি যাবতীয় প্র কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা, ডিজাইন ও নির্মাণের দায়িত্ব পালন করে থাকে। প্রকৌশল সামগ্রীর গুণগত মান যত বেশি উন্নত হবে সমস্ত কর্মকাণ্ডের নির্মাণের মানও তত বেশি উন্নত হবে। সে জন্য সকল প্রকৌশলীকেই যাবতীয় প্রকৌশল সামগ্রীর প্রস্তুত বা আহরণ প্রণালি এবং এদের ভৌত, রাসায়নিক ও যান্ত্রিক ধর্ম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।

[বাকাশিবো ১২(১)

৫। পয়সনের অনুপাত সংক্ষেপে বুঝিয়ে লেখ। উত্তর : পরসনের অনুপাত (Polsson’s Ratio): বস্তুর উপর বাহির হতে বল প্রয়োগ করলে বলেন ক্রিয়ার দিকে (Direction of force) বস্তুর যে বিকৃতি ঘটে তাকে লম্বালম্বি বিকৃতি বলে। বস্তুতে লম্বালম্বি বিকৃতি ঘটলে এর সাড়াপাড়ি বিকৃতিও ঘটে থাকে। এ বিকৃতিকে আড়াআড়ি বিকৃতি (Lateral Strain) বলা হয়। বিজ্ঞানী পয়সানের পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী বস্তুতে বলের ক্রিয়ায় আড়াআড়ি বিকৃতি ও বস্তুতে বলের ক্রিয়ামুখী বিকৃতি বা লম্বালম্বি বিকৃতি এর অনুপাত একটি ধ্রুবক। এ ধ্রুবককে পয়সনের ধ্রুবক বলা হয়। আর এ অনুপাতকে পরসনের অনুপাত বলে। একে যারা প্রকাশ করা হয়। পয়সনের অনুপাত

আড়াআড়ি বিকৃতি = লম্বালম্বি বিকৃতি

৬। সচরাচর ব্যবহৃত প্রকৌশল সামগ্রীর নাম লেখ।

বাকাশিবো: ১১(২))

অথবা, কয়েকটি প্রকৌশল সামগ্রীর নাম লেখ। উত্তর: সচরাচর ব্যবহৃত প্রকৌশল সামগ্রীর নাম নিচে প্রদত্ত হলো :

(১) ইট

(2)

পাথর

(৫) সিমেন্ট

(3)

(8) (৭) বালি (৮) কংক্রিট (৯) খাতু

(৬) সুরকি

(১০) কাঠ

(১১) কাচ (১৪) রং

(১২) সিরামিক (১৫) বার্নিশ ইত্যাদি।

(১৩) প্লাস্টিক

৭। কৃষ্ণন বিকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর। উত্তর : তৃপ্তন বিকৃতি । বাইরে হতে প্রযুক্ত বলের প্রভাবে যদি বস্তুর আকুতির পরিবর্তন ঘটে তবে এ পরিবর্তনকে শীয়ার বা কৃষ্ণন বিকৃতি বলে। ধরি, ABCD ঘনকটির DC ভলটি আটকিয়ে রেখে AB তলে বের হতে P বল প্রয়োগ করা হলো। এর ফলে এর আকার ৪ কোণে পরিবর্তিত হয়ে ABCD রূপ ধারণ করল।

এক্ষেত্রে শুধু আকৃতির যে পরিবর্তন হয়েছে তাই শীয়ার বিকৃতি। এর মান খুবই ক্ষুদ্র বিধায় শীয়ার বিকৃতি, 8- রেডিয়ান।

৮। নমনীয়তা বলতে কী বুঝ?

উত্তর : বস্তুর যে ধর্মের জন্য বস্তুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট বিকৃতি, তার উপর প্রযুক্ত বাহ্যিক বা অপসারণ করলেও বস্তু তার পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে না তাকে নমনীয়তা বলে। স্থিতিস্থাপকতা ধর্মের বিপরীত ধর্ম হলো নমনীয়তা। সালা নমনীয় ধাতব পদার্থের উদাহরণ।

৯। অনমনীয়তা বলতে কী বুঝ?

উত্তর : স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর বিকৃতি প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বস্তুর অনমনীয়তা বলা হয়, অর্থাৎ যে ধর্মের জন্য হয়। উল্লেখযোগ্য বিকৃতি ব্যতিরেকেই যথেষ্ট পরিমাণে পীড়ন নিতে পারে, তাকে অনমনীয়তা বলা হয়। যে বস্তুর স্থিতিস্থাপক শা যত বেশি তার অনমনীয়তাও তত বেশি। ইস্পাত অনমনীয় বস্তুর একটি উত্তম উদাহরণ।

১০। প্রসার্যতা বলতে কী বুঝ?

বিভিন্ন পুরকৌশল সামগ্রী

উত্তর কোনো বস্তুর নমাতা সীমার মধ্যে ছেঁড়া ব্যতিরেকে বিকৃতি হওয়ার সামর্থ্যকে প্রসার্যতা বলা হয়। অর্থাৎ কোনো বস্তুর যে ধর্মের জন্য বস্তুকে টান বল প্রয়োগ করলে উক্ত বস্তু লক্ষণীয় সীমার মধ্যে না ছিঁড়ে ক্রমাগত লম্বা হতে থাকে, তাকে প্রসার্যতা বলে। নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের নমুনায় টান প্রয়োগে হিড়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত লম্বা হওয়ার শতকরা হার দ্বারা প্রসার্যতার পরিমাপ করা হয়। তামা প্রসার্য ধাতুর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

১১। ঘাতসহতা বলতে কী কী বুঝ?

উত্তর : বস্তুর যে ধর্মের কারণে বস্তুতে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করলে তার নমনীয় বিকৃতি ঘটতে থাকে অর্থাৎ চাপের কারণে বস্তু বিচূর্ণ না হয়ে বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। বস্তুর এ ধর্মকে ঘাতসহতা বলা হয়। যে বস্তুর প্রসার্যতা বেশি তার মাতসহতাও অত্যধিক। এ ধর্মের জন্য পেটা লোহাকে হাতুড়ি দ্বারা পিটিয়ে পাতলা শীটে পরিণত করা হয়।

বলতে কী

১২। ভঙ্গুরতা বলতে

উত্তর : বস্তুর যে ধর্মের জন্য বস্তুর উপর চাপ প্রয়োগ করলে বিকৃতি ব্যতিরেকে বা সামান্য বিকৃতিতে ভেঙে যায় বা চূর্ণ হয়ে যায়, বস্তুর এ ধর্মকে ভঙ্গুরতা বলে। এটি বস্তুর ঘাতসহতা ধর্মের বিপরীত ধর্ম। ঢালাই লোহা, কাচ ইত্যাদি ভঙ্গুর ধাতুর উদাহরণ। ১০। কাঠিন্য বলতে কী বুঝ? উত্তর: যে ধর্মের জন্য বস্তু আঘাতে অবিচল থাকে তাকে কাঠিন্য বলে। বস্তুতে আঘাতের পর আঘাতে কিন্তু শক্তি বস্তুতে

শোষিত হয়। ফলে কিছু কাজ হয় এবং । কাজ গড় পীড়ন ও বিকৃতির গুণফলের সমান। যে বস্তু অধিক পীড়ন নিতে পারে।

তার অধিক বিকৃতি ঘটতে পারে, তার কাঠিন্যও অধিক হয়।

১৪। ফেটিগ বলতে কী বুঝ? উত্তর: বস্তুর যে ধর্মের জন্য বস্তুর পুনঃপুন ক্রিয়ারত পীড়ন প্রতিরোধে সক্ষম হয় তাকে বস্তুর ফোটপ বা ফোঁটা স্ট্রেহ বলে। একটি তারকে সরাসরি টেনে ছেড়া খুবই কষ্টকর কিন্তু তারটিকে কয়েকবার এদিক সেদিক মোচড়ানোর ফলে সহজেই ছেড়া। সম্ভব। ফেটিগ ধর্মের কারণেই এরূপ হয়ে থাকে। ১৫। স্থিতিস্থাপন ক্ষমতা বলতে কী বুঝ?

উত্তর : স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনো বস্তুর শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষমতাকে স্থিতিস্থাপন ক্ষমতা বলে। আনুপাতিক সীমা পর্যন্ত প্রতি

একক আয়তনের পীড়ন ও বিকৃতির গুণফল দ্বারা প্রাপ্ত কাজকে বস্তুর স্থিতিস্থাপন ক্ষমতা বলা হয়। অর্থাৎ স্থিতিস্থাপন ক্ষমতা =

প্রয়োগকৃত বল x বিকৃতি। ১৬। মন্থর বিকৃতি বলতে কী বুঝ?

উত্তর : কতকগুলো প্রকৌশল সামগ্রী দীর্ঘকাল যাবৎ স্থির লোড বহন করতে থাকে। ফলে ধীরে ধীরে ঐ সামগ্রীর বিকৃতি ঘটতে থাকে। এরূপ বিকৃতিকে মন্থর বিকৃতি বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আর.সি.সি কলাম, বীম, রুফ স্ল্যাব ইত্যাদির উপর দীর্ঘকাল যাবৎ স্থির লোড চাপানো থাকে। ফলে এগুলোতে ধীরে ধীরে বিকৃতি ঘটতে থাকে। এ বিকৃতিকে মন্থর বিকৃতি বলা হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ এরূপ বিকৃতি ঘটতে থাকলে কাঠামোর স্থায়িত্বতা কমে যায়। কাঠামোর উপর স্থির লোড অর্পণের পর যে বিকৃতি দেখা দেয় তা স্থির বিকৃতিতে থাকে। কিন্তু দীর্ঘসময় অতিক্রান্তের পর অপরিবর্তনীয় স্থির লোডের প্রভাবে ধীরে ধীরে বিকৃতির পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং এর প্রভাবে কাঠামো বিনষ্ট হয়। এ দ্বিতীয় বিকৃতির হারকে মন্থর বিকৃতি বলা হয়।

১৭। তাপীয় পীড়ন বলতে কী বুঝ?

উত্তর : সকল বস্তুই তাপে প্রসারিত এবং ঠাণ্ডায় সংকুচিত হয়। এ ধরনের বিকৃতি বস্তুতে কোনো পাঁড়ন ঘটায় না। কিন্তু ঐ বিকৃতি প্রতিরোধ করলে বস্তুতে পীড়নের সৃষ্টি হয়। একে তাপীয় পীড়ন এবং বিকৃতিকে তাপীয় বিকৃতি বলা হয়। তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে বিকৃতির পরিবর্তনের হারকে তাপীয় প্রসারণ সহগ বলা হয়। ১৮। “সামগ্রীর মান নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন প্রকৌশলীর কাজের আওতাভুক্ত” বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর : অনুচ্ছেদ ১.১ নং দ্রব্য।

১৯। প্রকৌশল সামগ্রী ‘টেস্টের’ প্রয়োজন হয় কেন? অথবা, প্রকৌশল সমাগ্রী টেস্টেরর প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা কর।

উত্তর: অনুচ্ছেদ ১.৩ নং দ্রষ্টব্য ২০। বস্তু কীভাবে ভৌত ধর্মাবলি অক্ষুণ্ণ রাখে?

অথবা প্রকৌশল সামগ্রীর ভৌত গুণাগুণ লেখ।

উত্তর : অনুচ্ছেদ ১.৩ নং খ্ৰষ্টব্য।

Leave a Comment