প্লাস্টার বা আস্তর

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ প্লাস্টার বা আস্তর।

প্লাস্টার বা আস্তর

 

প্লাস্টার বা আস্তর

 

প্লাস্টার বা আস্তর

মাস্টার এর সংগা

ইট বা পাথর দিয়ে তৈরি কাঠামোর ভিতর এবং বাহিরের অসমান পৃষ্ঠদেশকে সমতল, মসৃণ, শোভনীয় এবং আর্দ্রতারোধী করার জন্য মসলার সাহায্যে যে পাতলা স্তর দিয়ে আচ্ছাদিত বা ঢেকে দেয়া হয় তাকে প্লাস্টার বলে।

প্লাস্টারের উদ্দেশ্য ও প্রকারভেদ 

প্লাস্টারের উদ্দেশ্য নিয়ে দেওয়া হলো :

* পৃষ্ঠদেশকে মসৃণ ও সুন্দর করার জন্য।

* পৃষ্ঠদেশকে ওয়াশিং বা পেইন্টিং করার জন্য ।

* আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব হতে পৃষ্ঠদেশকে রক্ষা করার জন্য।

* অসমতল বা উঁচু-নিচু পৃষ্ঠদেশকে সমতল করে নির্মাণ কাজের এবং নির্মাণ সামগ্রীর ত্রুটি ঢেকে দেয়ার জন্য।

* স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ।

* অবকাঠামোর সৌন্দর্য্য ও শক্তি বৃদ্ধির জন্য।

 

প্লাস্টার বা আস্তর

 

প্লাস্টারের প্রকারভেদ

মসলার উপাদানের উপর ভিত্তি করে প্লাস্টারকে ৭ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা:

১. লাইম প্লাস্টার

২. সুরকি প্লাস্টার

৩. লাইম সুরকি প্লাস্টার

৪. সিমেন্ট প্লাস্টার

৫. জিপসাম প্লাস্টার

৬. মোজাইক/টেরাজো প্লাস্টার

৭. মাড প্লাস্টার

প্লাস্টারের উপাদানসমূহ।

১. লাইম প্লাস্টার → ন+বালু পানি

২. সুরকি প্লাস্টার → চুন সুরকি পানি ৩. লাইম সুরকী প্লাস্টার চুন সুরকি বালু +পানি

৪. সিমেন্ট প্লাস্টার সিমেন্ট + বালু +পানি

৫. জিপসাম প্লাস্টার প্লাস্টার অপ প্যারিস + বালু + পানি

৬. মোজাইক/টেরাজো প্লাস্টার স্টোনচিপস +সিমেন্ট + পানি

৭. মাড প্লাস্টার → মাটি +গোবর+তুষ/ কাঠের গুঁড়া পানি

 

প্লাস্টার বা আস্তর

 

প্লাস্টার প্রয়োগের সারফেস প্রস্তুত করার পদ্ধতি

  • ইলেক্ট্রিক, প্লাম্বিং, নেটওয়ার্কিং ইত্যাদির ড্রয়িং ইত্যাদি চেক করা।
  • সহজে চলাফেরা বা আসা-যাওয়া করা যায় এমন প্লাটফর্ম।
  • মর্টারের পুরুত্ব, লেভেল।
  • পাইপ, কলাম জয়েন্টে চিকেন মেঘ আছে কি নেই ।
  • সার্ফেস তৈরি : স্যাঁতসেঁতে, লবণ বা ড্যাম্প নেই বা ঠিক করা ।
  • সিমেন্ট, বালু ইত্যাদি ঠিক জায়গাতে রাখা।
  • প্লাস্টারের জায়গা পানি দিয়ে ভেজানো ।
  • ভাল বালু এবং চালুনী দিয়ে ভালভাবে চালা।
  • বিম ও ব্রিক ওয়ালের গ্যাপ বা তলার মধ্যে বিশেষ প্লাস্টার বা কেমিক্যাল দেয়া ।

প্লাস্টার প্রয়োগের পদ্ধতি

  • কী পরিমাণ সিমেন্ট ও বালি লাগবে তা প্রথমে পরিমাপ করে নিতে হবে।
  • সিমেন্ট ও বালি আনুপাতিক হারে মেশাতে হবে।
  • এবার এই সিমেন্ট ও বালির মিশ্রণে পানি পরিমাণ মতো দিতে হবে।
  • পানির পরিমাণ এমন হবে যেন শক্ত বা জেলের মতো না হয়। কেননা ঢলঢলে হলে তা ভালো মতো ধরবে না। পড়িয়ে পড়ে যাবে। আবার বেশি শুকনা হলেও চলবে না।
  • প্লাস্টার করার আগে দেয়ালে ভিজিয়ে নিতে হয়। • এবার একটু সময় দিতে হবে যেন দেয়াল প্লাস্টারকে আঁকড়ে ধরতে পারে।
  • এরপর কুর্ণি দিয়ে প্লাস্টারটি দেয়ালে মারতে হবে।
  • কুর্ণি দিয়ে প্লাস্টারকে মসৃণ করতে হবে।
  • এরপর পাট্টা ব্যবহার করে অতিরিক্ত ময়লা কেটে ফেলতে হবে।
  • এবার ঊষা দিয়ে ভালভাবে ফিনিশিং দিতে হবে।
  • কোন ডিজাইন থাকলে এই কাঁচা অবস্থায় করতে হবে। কেননা শুকিয়ে গেলে এটা মজবুত হয়ে যাবে।

 

Google_news_logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

প্লাস্টারের সময় লক্ষনীয় বিষয়সমূহ :

  • মর্টার মেশানোর জন্য জায়গা ও টে।
  • লেভেল, লাইন, পুরুত্ব।
  • মিক্সিং-এর অনুপাত ।
  • ওয়াটার প্রফিং কেমিক্যাল ব্যবহার।
  • ঠিকমতো রাফ প্লাস্টার করা।
  • মিক্সারের পানির অনুপাত ।
  • ময়লা বা ডেড মর্টার পরিষ্কার করা।
  • প্লাস্টারের সার্ফেস এর উঁচু-নিচু।
  • গ্রুন্ড ও স্লিপ কোর্স।
  • টাইলস, স্কার্টিং-এর জন্য ফাঁকা জায়গা ।
  • প্লাস্টার-এর শল বা ভার্টিক্যালিটি রাখা।
  • দরজার ফ্রেম বসানোর পর প্লাস্টারের সাথে সামঞ্জস্য (ডিজাইন অনুসারে) চেক করা।

উত্তম প্লাস্টারের গুণাবলি :

  • প্লাস্টারকৃত সারফেস মসৃণ ও পরিষ্কার হবে।
  • প্লাস্টারের মধ্যে কোনো ছিদ্র নেই, ত্রুটি যুক্ত ।
  • কোন ক্র্যাক নেই, ত্রুটিযুক্ত।
  • পানি শোষণ করবে না এবং আর্দ্রতা প্রতিরোধী হবে।
  • আবহাওয়াজনিত কারণে কোনো পরিবর্তন হবে না।
  • প্লাস্টারের তারিখ লেখা আছে।
  • ঠিকমতো কিউরিং করা হয়েছে।

প্লাস্টার মই হওয়ার কারণ :

  • ঠিকমতো কিউরিং না করা । 
  • প্লাস্টারকৃত সারফেস অমসৃণ।
  • প্লাস্টারের মধ্যে ছিদ্র বা ত্রুটি ।
  • আবহাওয়াজনিত কারণ।
  • প্লাস্টারের উপাদানসমূহ ত্রুটিপূর্ণ।
  • বাইরের আঘাতপ্রাপ্ত।
  • বিরূপ পরিবেশের কারণে।
  • যথাযথভাবে পেইন্ট না করা ।

প্লাস্টার বা আস্তর প্লাস্টার বা আস্তর প্লাস্টার বা আস্তর প্লাস্টার বা আস্তর

প্লাস্টারের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামের তালিকাঃ

 

প্লাস্টার বা আস্তর

প্লাস্টার বা আস্তর

অনুশীলনী – ১৯

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নঃ

১. প্লাস্টার বা আস্তর কী?

২. ক্ল হাতুড়ি কী?

৩. মাটাম কী?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নঃ

১. প্লাস্টার কয় প্রকার ও কী কী ?

২. প্লাস্টারের উদ্দেশ্য লেখ।

৩. প্লাস্টারের উপাদানসমূহ লেখ।

৪. প্লাস্টারের সময় লক্ষণীয় বিষয়সমূহ কী কী?

৫. উত্তম প্লাস্টারের গুণাবলি কী কী ?

৬. প্লাস্টার নষ্ট হওয়ার কারণ সমূহ কী কী ?

রচনামূলক প্রশ্ন :

১. প্লাস্টার প্রয়োগের সারফেস প্রস্তুত করার নিয়মাবলি বর্ণনা কর।

২. প্লাস্টার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের বর্ণনা দাও।

৩. প্লাস্টার প্রয়োগের পদ্ধতি বর্ণনা কর।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment