বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের আর্থিং | অধ্যায়-২০ | বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স-২

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের আর্থিং যা অধ্যায়-২০ এর বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স-২ এ অন্তভুক্ত।  শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই।তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষা ম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের আর্থিং

আর্থিং-এর সংজ্ঞা

অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎ থেকে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও মানুষকে রক্ষা করতে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ধাতু নির্মিত বহিরাবরণ থেকে বৈদ্যুতিক কারেন্টকে কোনো পরিবাহীর ভিতর দিয়ে পৃথিবীর মাটিতে প্রেরণ করার ব্যবস্থাকে আর্থিং বলে।

আর্থিং-এর গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা

আর্থিং-এর প্রয়োজনীয়তা:

১। বজ্রপাত, শর্ট সার্কিট কীংবা ইনসুলেশন নষ্ট হয়ে বা অন্য যে কোনো কারণে ইলেকট্রিক্যাল ইকুইপমেন্ট বা সিস্টেম-এর ভোল্টোজ বেড়ে গেলে তা মাটিতে পৌঁছে দেয়ার জন্য আর্থিং করা প্রয়োজন।

২। ট্রান্সফরমারের মধ্য হতে একটি লাইন ত্রুটিযুক্ত হলে (বিচ্ছিন্ন হয়ে) হাই ভোল্টেজ উৎপত্তি হয়। ভোল্টেজকে মাটির মধ্যে প্রবাহিত করার জন্য আর্থিং-এর প্রয়োজন।

৩। অতিরিক্ত লিকেজ কারেন্ট আর্থিং তারের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে লিকেজ সার্কিট ব্রেকারের সাহায্যে অল্টারনেটর, ট্রান্সফরমার ও বৈদ্যুতিক মেশীনারিজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আর্থিং এর প্রয়োজন।

৪। কোনো কারণে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম বডি হলে উক্ত যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম যে ব্যক্তি পরিচালনা করবেন সেই ব্যক্তি এবং অন্য কোনো প্রাণীকে বৈদ্যুতিক শক বা আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য আর্থিং করা প্রয়োজন।

৫। বড় বড় ইমারতকে বজ্রপাত হতে রক্ষা করার জন্য আর্থিং প্রয়োজন।

আর্থিং-এর গুরুত্ব:

ক) আর্থ সার্কিটের কোনো ত্রুটিযুক্ত কারেন্টকে সহজে মাটি দিয়ে প্রবাহিত করে, যার ফলে ফিউজ, সার্কিট ব্রেকার প্রভৃতি রক্ষণ যন্ত্র খুলে যায় এবং ত্রুটিযুক্ত সার্কিটকে সহজে উৎস হতে আলাদা করে।

খ) ওয়্যারিং এর যে কোনো অংশ হাই ভোল্টেজ এর সংস্পর্শে আসে এই ভোল্টেজকে নির্দিষ্ট মানে রাখার জন্য আথিং গুরুত্বপূর্ণ।

গ) ত্রুটিকালীন অবস্থায় যাতে বৈদ্যুতিক সাজসরঞ্জামে কোনো বিপজ্জনক ভোল্টেজ না থাকে তার নিশ্চয়তা দেয়।

আর্থিং-এর প্রয়োজনীয় উপাদান বর্ণনা কর

আর্থিং-এর প্রয়োজনীয় প্রধান উপাদান তিনটি। যথা-

১। আর্থ প্লেট বা আর্থ ইলেকট্রোড।

২। মেইন আর্থিং লিড বা আর্থ তার।

৩। আর্থ-এর নিরবিচ্ছিন্ন তার।

১। আর্থ প্লেট বা আর্থ ইলেকট্রোড: আর্থ তার (earth lead) এর শেষে যে ধাতুর ফলক বা পাত কীংবা ধাতুর পাইপ মাটির ভিতর পোঁতা থাকে তাকে আর্থ প্লেট বা আর্থ ইলেকট্রোড বলে। যে ধাতুর আর্থ তার ব্যবহার করা হয় সেই ধাতুরই আর্থ প্লেট বা আর্থ ইলেকট্রোড হতে হবে। সচরাচর পাঁচ রকমের আর্থ ইলেকট্রোড ব্যবহার করা হয়। এগুলো নিম্নরূপ:

  • ক) পাইপ ইলেকট্রোড: গ্যালভানাইজ করা ইস্পাত বা লোহার পাইপ আর্থ-ইলেকট্রোড হিসাবে ব্যবহৃত হয়। টিউবওয়েলের পাইপের সাথেও আর্থ করা যায়।
  • খ) রড ইলেকট্রোড: গ্যালভানাইজ করা লোহার বা ইস্পাত রড (যার সর্বনিম্ন ব্যাস ১৬ মি. মি.) কীংবা তামার রড (যার সর্বনিম্ন ব্যাস ১২.৫ মি. মি.) কে ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তবে রডের সর্বনিম্ন দৈর্ঘ্য ২.৫ মিটার হতে হবে।
  • গ) প্লেট ইলেকট্রোড: গ্যালভানাইজ করা লোহার প্লেট যার সাইজ ৬০ সে. মি. x ৬০ সে. মি. X ৬.৩৫ মি. মি. ২’x ২’X) এবং তামার আর্থ প্লেটের সাইজ ৬০ সে. মি. × ৬০ সে. মি. X
    ৩.১৫ মি. মি. ২’x ২’ কে প্লেট ইলেকট্রোড হিসাবে ব্যবহার করা হয়। উভয় ক্ষেত্রে প্লেটকে দাঁড় করিয়ে মাটিতে এমনভাবে পুঁততে হবে যাতে তার উপর দিকটা জমির অন্তত তিন মিটার (বা ১০ ফুট) নিচে থাকে।
  • ঘ) স্ট্রিপ বা কন্ডাক্টর ইলেকট্রোড: গ্যালভানাইজ করা লোহা বা ইস্পাতের পাত (যার সর্বনিম্ন প্রস্থচ্ছেদ ২৫ মি. মি. x ৪ মি. মি.) কীংবা তামার পাত (যার সর্বনিম্ন প্রস্থচ্ছেদ ২৫ মি. মি. x ১.৬ মি. মি.) কে ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গোলাকার তামার কন্ডাক্টর হলে সর্বনিম্ন প্রস্থচ্ছেদ ৩ বর্গ মি. মি. এবং গ্যালভানাইজ করা লোহা বা ইস্পাতের হলে ৬ বর্গ মি. মি. হওয়া উচিত। স্ট্রিপ বা কন্ডাক্টরের দৈর্ঘ্য ১৫ মিটারের কম হওয়া উচিত নয়।
  • ঙ) শিট ইলেকট্রোড: গ্যালভানাইজ করা লোহার শিট যার পুরুত্ব কমপক্ষে ১.৬৩ মি. মি. এবং ২ হতে ৬ বর্গমিটার সাইজের হওয়া উচিত।

২। মেইন আর্থিং লিড বা আর্থ তার: বিদ্যুৎ গ্রাহকের আর্থ টারমিনাল (আর্থ বাসবার) কীংবা আর্থ লিকেজ সার্কিট ব্রেকারের কয়েলকে আর্থ প্লেট বা আর্থ ইলেকট্রোড-এর সঙ্গে সংযোগ করতে যে তার ব্যবহার হয় তার নাম আর্থ তার। কখনও কখনও আর্থ প্লেটকে সরাসরি আসবাবপত্র বা মেশিনের আবরণের সাথে সংযোগ করে। তামার কীংবা গ্যালভানাইজ করা লোহার তার (সাধারণত ৪.৬ কীংবা ৪ নং S.W.G) আর্থ তার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

আর্থিং-এ ব্যবহৃত আর্থিং ওয়‍্যার

 

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের আর্থিং
চিত্র : আর্থিং

আর্থ ইলেকট্রোডের উপর ভিত্তি করে আর্থিং পাঁচ প্রকার হয়ে থাকে, যথা-

১। পাইপ আর্থিং,

২। রড আর্থিং,

৩। প্লেট আর্থিং,

৪। শিট আর্থিং,

৫। স্ট্রিপ আর্থিং।

 

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের আর্থিং
চিত্র : পাইপ আর্থিং

১। পাইপ আর্থিং: গ্যালভানাইজ করা লোহার বা ইস্পাতের পাইপ ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পাইপের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ২ মিটার আর ভিতরের ব্যাস ৩৮ মি.মি. হতে হবে। মাটি যদি শুকনা এবং খুব শক্ত হয়, তবে পাইপের দৈর্ঘ্য ২.৭৫ মিটার নিতে হবে। পাইপকে লম্বালম্বিভাবে ৭.৫ সে.মি. অন্তর ১২ মি.মি. ব্যাসবিশিষ্ট ছিদ্র করা হয়। একটি ছিদ্র পরবর্তী ছিদ্রের আড়াআড়ি হবে যেন উপর হতে পানি ঢাললে ছিদ্রের মাধ্যমে পানি গিয়ে ইলেকট্রোডের চারপাশে মাটি ভেজা রাখে।

বিল্ডিং হতে ১.৫ মিটার ব্যবধানে সাধারণত ৪.৭৫ মিটার গভীর গর্ত করা হয়। তবে মাটির ভিতর যতটা গভীরে ভেজা মাটি পাওয়া যায়, ততদূর পর্যন্ত গর্ত খোঁড়া প্রয়োজন। পাইপের নিচের দিকে চারপার্শ্বে ১৫ সে.মি. পর্যন্ত জায়গা কাঠ কয়লা আর লবণ দিয়ে ঘিরে দিতে হয়। এতে কাঠ কয়লা পাইপ আর মাটির মধ্যে সংযোগের আয়তন বৃদ্ধি করে এবং লবণ আর্থের রেজিস্ট্যান্স কমিয়ে দেয়। গর্তের মধ্যে প্রথম স্তরে লবণ আর দ্বিতীয় স্তরে কাঠ কয়লা এভাবে সাজানো থাকে। গ্রীষ্মকালে মাটির আর্দ্রতা কমে গিয়ে আর্থের রেজিস্ট্যান্স বৃদ্ধি পায়।

তখন যাতে গর্তের মধ্যে কয়েক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে মাটিকে স্যাঁতসেঁতে রাখা যায়, সে জন্য ইলেকট্রোডের মাথায় সকেটের সাহায্যে একটি ১৯.০৫ মি. মি. ব্যাসের লোহার পাইপ বসিয়ে তার উপর একটি ফানল বসানো হয়। ফানেলের মুখ তারের জালি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়, যাতে কোনো শক্ত জিনিস ভিতরে ঢুকে পাইপের মুখটা বন্ধ করে ফেলতে না পারে। বৈদ্যুতিক স্থাপনের কোথাও কোনো দোষত্রুটি দেখা দিলে সর্বাপেক্ষা বেশি যত কারেন্ট আর্থে যাবে, তা হিসাব করে সে অনুসারে আর্থের তারের আয়তন নির্ণয় করা হয়। তবে সচরাচর ৮.৬ কিংবা ৪ নং এসডব্লিউজি গেজের গ্যালভানাইজ করা লোহার তার আর্থ তার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

আর্থ ইলেকট্রোডের উপর ১৯.০৫ মি.মি. ব্যাসের যে লোহার পাইপ বসানো থাকে, তার সঙ্গে এক প্রান্তে সংযোগ করে জমির প্রায় ৬০ সে.মি. নিচ দিয়ে ১২.৭ মি.মি. ব্যাসযুক্ত গ্যালভানাইজ করা লোহার পাইপের মধ্য দিয়ে আর্থের তারকে আর্থিং বাস বার বা মেইন সুইচ পর্যন্ত নেয়া হয়। অতঃপর আর্থ কন্টিনিউটি তারের মাধ্যমে সকল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামে সংযোগ দিতে হয়।

২। গ্যালভানাইজ করা লোহার প্লেট বা তামার প্লেটের সাহায্যে আর্থিং: গ্যালভানাইজ করা লোহার প্লেট, যার সাইজ কমপক্ষে ৬০ সে.মি. x ৬০ সে.মি. x ৬.৩৫ সে.মি. (২x২x১) কীংবা তামার প্লেট, যার সাইজ কমপক্ষে ৬০ সে.মি. x ৬০ সে.মি. × ৩.১৮ মি.মি. (২’ x ২’x) কে আর্থ ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। উভয় ক্ষেত্রে প্লেটকে দাঁড় করিয়ে মাটিতে পুঁততে হবে, যাতে তার উপর দিকটা ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে ৩ মিটার (১০ ফুট) নিচে থাকে। তবে এমন মাটিতে আর্থ প্লেট রাখতে হবে, যেখানে অনবরত ভিজে স্যাঁতসেঁতে থাকে।

প্লেটের চারদিকে কাঠ-কয়লা কীংবা কার্বনের টুকরা ঠেসে দিয়ে লবণ মিশ্রিত পানি ঢেলে গর্তকে ভরাট করতে হবে। প্লেটের উপর থেকে সাধারণত দুটো গ্যালভানাইজ করা লোহার পাইপ উঠে আসে। একটি পাইপের ব্যাস ১২.৭ মিলিমিটার। এ পাইপের মধ্য দিয়েই আর্থের তার জমির প্রায় ৬০ সে.মি. নিচ দিয়ে মেইন সুইচ বোর্ড কীংবা আর্থিং পর্যন্ত আনা হয়। অন্য পাইপটির ব্যাস ১৯.০৫ মি.মি., যার উপর মাথায় একটি ফানেল থাকে। ফানেলের মুখ তাারের জালি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়, যাতে কোনো শক্ত জিনিস ভিতরে ঢুকে মুখ বন্ধ করে ফেলতে না পারে।

শুষ্ক মৌসুমে মাঝে মাঝে পানি ঢেলে আর্থ প্লেটের পার্শ্বে ভিজে রাখার জন্য এরূপ বন্দোবস্ত করা হয়। ফানেলে পাইপের উপর মাথায় চারদিকে ৩০ সে.মি. x ৩০ সে.মি. মাপের ইটের চৌবাচ্চা গাঁথা থাকবে। চৌবাচ্চাটির একটি ঢাকনা থাকবে, যেটা প্রয়োজনে খুলে পানি ঢালা যায়।

৩। রড আর্থিং: বর্তমানে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি গ্যালভানাইজ করা ২.৫ মিটার লম্বা ১৬ মি.মি. ব্যাসের লোহার বা জিআই পাইপকে আর্থিং ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহার করছে। পাথরের জায়গায় এ রকম রড শোয়ানো রাখলে ভাল ফল পাওয়া যায়। প্রয়োজনে রডের দৈর্ঘ্য বাড়ানো যেতে পারে।

৪। কন্ডাক্টর বা স্ট্রিপ আর্থিং: এতে গ্যালভানাইজ করা লোহা বা ইস্পাতের পাতে (যার সর্বনিম্ন প্রস্থচ্ছেদ ২৫ মি.মি. × ৪ মি.মি.) অথবা তামার পাত (যার সর্বনিম্ন প্রস্থচ্ছেদ ২৫ মি.মি. x ১.৬ মি.মি.) কে ইলেকট্রোড হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এ ইলেকট্রোডের দৈর্ঘ্য ১৫ মিটারের কম নেয়া উচিৎ নয়। কমপক্ষে ০.৫ মিটার মাটির নিচে একটি বা একাধিক নালা খনন করে তার মধ্যে ইলেকট্রোড শুইয়ে রাখা হয়।

৫। শিট ইলেকট্রোড: এতে গ্যালভানাইজ করা লোহার পাত (যার সাইজ ২ থেকে ৬ বর্গমিটার এবং পুরুত্ব কমপক্ষে ১.৬৩ মি.মি.) কে ইলেকট্রোড হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত পাহাড়ের ঢালে ট্রেঞ্চ কেটে শিট ইলেকট্রোড বসাতে হয়।
এছাড়া ভূগর্ভস্থ জিআই পাইপের পানির লাইনের সাহায্যেও আর্থিং করা যায়। এক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের আর্থিং ক্যাম্পের সাহায্যে পাইপের সাথে আর্থিং তার এমনভাবে এঁটে দেয়া হয়, যাতে সংযোগস্থলের রেজিস্ট্যান্স খুবই সামান্য থাকে। পানির লাইন নিজস্ব সম্পত্তি না হয়ে মিউনিসিপ্যালিটি কীংবা অন্য কারো সম্পত্তি হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যাতিরেকে আর্থিং করা চলবে না

 

Google_news_logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আর্থিং-এর নিরবিচ্ছিন্নতা

ফেজ-এর মধ্যে ভোল্টেজ এবং কারেন্ট থাকে, নিউট্রাল-এর মধ্যে মাত্র রিটার্ন কারেন্ট থাকে এবং আর্থিং-এর মধ্যে ভোল্টেজ এবং কারেন্ট কোনোটাই থাকে না। নিউট্রাল আর্থিং হতে পারে কীন্তু আর্থিং কখনো নিউট্রাল হতে পারে না।

আর্থিংকে অনেক দেশে গ্রাউন্ডিংও বলে। আর্থিং করার উদ্দেশ্য হলো লাইনে কারেন্ট লিকেজ হলে তা যেন কোনো রকম বিপদ না ঘটিয়ে তারের মাধ্যমে সহজে মাটিতে চলে যেতে পারে। আর্থ করা না থাকলে লিকেজ কারেন্টের কারণে ডিভাইসের বডি ইলেকট্রিক চার্জপ্রাপ্ত হয় এবং সে অবস্থায় কোনো লোক তার সংস্পর্শে এলে ইলেকট্রিক শক প্রাপ্ত হয়। এ রকম অবস্থায় ডিভাইস পুরে যাবারও ভয় থাকে। কিন্তু সাপ্লাই লাইনের নিউট্রাল তার ও যন্ত্রের বডি উভয়ই আর্থ করা থাকলে লিকেজ কারেন্ট আর্থিং-এর মাধ্যমে সার্কিট ক্লোজ হয়ে ফিউজ পুড়ে যেতে বা সার্কিট ট্রিপ করতে সাহায্য করে এবং সমস্ত ব্যবস্থাকে নিরাপদ রাখে।

নিউট্রাল-এর মধ্যে শুধু কারেন্ট থাকে। নিউট্রাল যদি না থাকে তাহলে সার্কিট ক্লোজ হবে না, মানে সাপ্লাই প্রবাহিত হবে না। অর্থাৎ সিস্টেম কাজ করবে না।

ফেজ-এর মধ্যে ভোল্টেজ এবং কারেন্ট দুটোই থাকে এবং ডিভাইস-এর মধ্যে ভোল্টেজ ড্রপ হয় এবং কারেন্ট নিউট্রাল-এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সিস্টেমকে সচল রাখে।

লার্নিং পদ্ধতির বর্ণনা

 

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের আর্থিং

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের আর্থিং
চিত্র: আর্থিং করার পদ্ধতি

অনুশীলনী-২০

অতি সংক্ষিপ্ত:

১। আর্থিং কী?

২। আর্থিং কাজে প্রয়োজনীয় মালামাল ও যন্ত্রপাতির নাম লেখ।

৩। আর্থিং-এর প্রয়োজনীয় প্রধান উপাদান কী কী?

৪। আর্থ ইলেকট্রোডের উপর ভিত্তি করে আর্থিং কয় প্রকার হয়ে থাকে?

৫। রড আর্থিং কী?

৬। কন্ডাকটর বা স্ট্রিপ আর্থিং কী?

৭। শিট ইলেকট্রোড কী?

৮। পাইপ আর্থিং কী?

সংক্ষিপ্ত:

১। আর্থিং-এর প্রয়োজনীয়তা লেখ।

২। আর্থিং-এর গুরুত্ব লেখ।

৩। আর্থিং কাজে প্রয়োজনীয় মালামাল ও যন্ত্রপাতির বর্ণনা লেখ।

৪। আর্থিং-এর নিরবচ্ছিন্নতা কী তা বর্ণনা কর।

৫। একটি দালানের আর্থিং পদ্ধতি বর্ণনা কর।

৬। লাইটিং অ্যারেষ্টার বা বজ্রনিরোধক সম্পর্কে বর্ণনা কর।

৭। বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে ভবনকে সংরক্ষণের উপায় বর্ণনা কর।

৮। আর্থিং কাজে কী ধরনের আর্থিং ওয়্যার ব্যবহার হবে তা লেখ।

রচনামূলক:

১। আর্থিং কাজে কী ধরনের আর্থিং ওয়‍্যার ব্যবহার হবে তা বর্ণনা কর।

২। যেকোনো একটি আর্থিং পদ্ধতি চিত্রসহ বর্ণনা কর।

৩। আর্থিং-এর প্রয়োজনীয় উপাদান বর্ণনা কর।

আরও দেখুন :

Leave a Comment