আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের কংক্রিট।
বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের কংক্রিট
৬.১ কংক্রিটের বর্ণনা
সিমেন্ট, বালু, খোয়া নির্দিষ্ট অনুপাতে পানির সংমিশ্রণে তৈরি কৃত্রিম পদার্থকে কংক্রিট বলে। নির্দিষ্ট অনুপাতে জমাট বাঁধাইকারী উপাদান (সিমেন্ট বা চুন), সরু দানার উপাদান বালু, মোটা দানার উপাদান (খোয়া), পানি এবং Admixtures সহযোগে (প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে) মিশ্রিত করে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জমাট বাধিয়ে যে শক্ত পিণ্ড তৈরি হয় তাহাই কংক্রিট। এ জাতীয় কংক্রিটের চাপ সহ্য ক্ষমতা বেশি। তাই যেখানে কংক্ৰিটকে বেশি চাপ সহ্য করতে হয় সেখানে এটা ব্যবহার করা হয়। যেমন: বেড ব্লক, প্রাতিটি, রিটেইনিং ওরাল এবং আর্চ ইত্যাদি ।
কংক্রিটের প্রকারভেদ
কংক্রিট মুলত: দুই প্রকার- প্লেইন কংক্রিট বা পি.সি.সি এবং আর.সি.সি কংক্রিট বা আর.সি.সি ।
প্লেইন কংক্রিট যা পি.সি. (Plain Cement Concrete) : নির্দিষ্ট অনুপাতে জমাট বাঁধাইকারী উপাদান, মোটা দানা উপাদান, সরু দানা উপাদান এবং পানির সংমিশ্রণে রাসায়নিকভাবে তৈরিকৃত জমাটবদ্ধ পিজই প্লেইন সিমেন্ট কংক্রিট বা গ্লেইন কংক্রিট (পি.সি.সি) বলে।
রি-বার) থাকে না, চাপ সহ্য ক্ষমতা বেশির কারণে যেখানে কংক্রিটকে বেশি চাপ সহ্য করতে হয়, সেখানে এটা ব্যবহার করা হয়। যেমন- বেড ব্লক, পুরু গ্রাভিটি ড্যাম ইত্যাদি।
আর.সি.সি (Reinforced Cement Concrete) : স্টিল বা রড (রি-বার/ রিইনফোর্সিং বার) এর
শিয়ার এবং টানা বল সহ্য করার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে কাঠামোর যে সমস্ত মেম্বারকে টানা বল এবং শিয়ার সহ্য করতে হয়, সে সমস্ত জায়গায় প্লেইন কংক্রিটের উপাদানের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় রড (রি- বার/রিইনফোর্সিং বার) সহযোগে আর.সি.সি কংক্রিট ব্যবহৃত হয়। যেমন-কলাম বিম, স্ল্যাব ইত্যাদি।
কংক্রিটের জমাটবাধাইকারী উপাদানের ভিত্তিতে কংক্রিট দুই প্রকার-
১. লাইম কংক্রিট (Lime Concrete) এবং
২. সিমেন্ট কংক্রিট (Cement Concrete ) ।
১. লাইম কংক্রিট (Lime Concrete) : নির্দিষ্ট অনুপাতে জমাট বাঁধাইকারী উপাদান (চুন), খোয়া (ব্রিক চিপস), মোটা দানার উপাদান (সুরকি) এবং পানি সহযোগে মিশ্রিত করে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জমাট বাঁধিয়ে লাইম কংক্রিট (Lime Concrete) প্রস্তুত করা হয়।
২. সিমেন্ট কংক্রিট (CementConcrete ) : নির্দিষ্ট অনুপাতে জমাট বাঁধাইকারী উপাদান (সিমেন্ট), খোয়া (ব্রিক চিপস)/ স্টোন চিপস, বালু এবং পানি সমন্বয়ে তৈরিকৃত কংক্রিট।
কংক্রিট প্রধানত চার প্রকার। যথা:-
ক) লাইম কংক্রিট (Lime Concrete )
খ) সিমেন্ট কংক্রিট (Cement Concrete ) গ) আর. সি. সি কংক্রিট (Reinforced Cement Concrete
ঘ) প্রি স্ট্রেসড কংক্রিট (Pre-Stressed Concrete)
এছাড়া মিশ্রণ ও ব্যবহার অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার কংক্রিট হয়, যেমন-
* লাইট ওয়েট কংক্রিট বা হালকা কংক্রিট
* এয়ার এনটেইন কংক্রিট
* হাই পারফরম্যান্স কংক্রিট
* হাই টেস্থ কংক্রিট
* নরমাল বা সাধারণ কংক্রিট
রোলার কম্প্যাক্টেড কংক্রিট
* পারভিয়াস কংক্রিট
* সেলফ কমপ্যান্টিং কংক্রিট
কংক্রিটের ব্যবহার/function এর ভিত্তিতে কংক্রিট নিম্নরূপ :
১. নরমাল বা সাধারণ কংক্রিট শুধুমাত্র পানি, সিমেন্ট এবং এগ্রিগেট দিয়ে তৈরি কংক্রিটকে নরমাল বা
সাধারণ কংক্রিট বলে। Ordinary কাজে এর ব্যাপক ব্যবহার হয়। সেটিং টাইম ৩০-৯০ মিনিট, ঘনত্ব ১৪০ থেকে ১৭৫ পি.এস.এফ এবং শক্তি (১৪৫০-৫৮০০) পিএসআই পর্যন্ত হয়ে থাকে। ২৮ দিনে ৭৫% থেকে ৮০% শক্তি পায়।
২. লাইট ওয়েট কংক্রিট বা হালকা কংক্রিট তুলনামূলকভাবে কম ওজনের এগ্রিগেট ব্যবহার করে লাইট
ওয়েট কংক্রিট বা হালকা কংক্রিট হয়ে থাকে। সেটিং টাইম ৩০-৯০ মিনিট ঘনত্ব (১৫-১১৫) পি. এস.এফ এবং শক্তি (১০০০- ৫৮০০) পিএসআই পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেখানে অতিরিক্ত ভার বহন করতে হয় না। সেখানে এই কংক্রিট ব্যবহার করা হয়। যেমন- প্যারাপেট, ফ্লোর উঁচু করা ইত্যাদি।
৩. এয়ার এনটেইন কংক্রিট বরফাচ্ছন্ন এলাকা যেখানে Freezing and thawing (বরফ হওয়া ও গলে
যাওয়া হয়, বাতাস প্রবেশ্য এজেন্ট মিশিয়ে বাতাসের ফাঁদ তৈরি করে এই কংক্রিট তৈরি করা হয়। ফলে, একটা সুনির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত বরফ জমাট ও গলনকালীন সময়ে কংক্রিটস্থিত পানির ভারসাম্য বজায় রেখে কংক্রিটকে ক্র্যাক হতে দেয়না। সাধারণ কংক্রিটের চেয়ে এই কংক্রিটের শক্তি তুলনামূলকভাবে কম ।
৪. হাই পারফরম্যান্স কংক্রিট : উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্লাস্টিসাইজার এবং সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (২০- ২৫ শতাংশ ফ্লাই অ্যাশ এবং বাকি ৭০% সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট) ব্যবহারের মাধ্যমে সেগ্রিগেশন বা ছড়িয়ে পড়া ছাড়াই তরল বা গ্যাসের চলাচল, উচ্চকার্যোপযোগিতা, দীর্ঘস্থায়ী মেকানিকাল গুণাগুণ এবং টেকসই, অনুকূল পরিবেশ টিকে থাকার ক্ষমতা, অল্প সময়েই উচ্চ শক্তি অর্জন (১০,০০০ – ১৫,০০০ পি.এস.আই) এবং দীর্ঘস্থায়ী কংক্রিটই হাই পারফরম্যান্স কংক্রিট।
৫. হাই টেছ কংক্রিট : এই কংক্রিটের চাপ শক্তি ৬০০০ পি.এস.আই এর বেশি হয়ে থাকে। ৩৫% বা তার নিচে এর পানির অনুপাত হয়ে থাকে। সিলিকা গ্যাস ব্যবহার করা হয় সিমেন্টের যুক্ত ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের পরিবর্তন, যা কংক্রিটের সিমেন্ট-এগ্রিগেট বন্ধনশক্তি কমিয়ে ফেলে।
কম পানি এবং সিলিকা গ্যাস ব্যবহার এর কারণে এর কার্যোপযোগীতা কমে যায়। যার কারণে এর ব্যবহার করা সমস্যা হয়। এ জন্য এতে সুপার প্লাস্টিসাইজার ব্যবহার করা হয়। হাই স্ট্রেস্থ কংক্রিটে অবশ্যই ভালো শক্তির এগ্রিগেট ব্যবহার করতে হবে।
৫. রোলার কম্প্যাক্টেড কংক্রিট উচ্চ ঘনত্বের কংক্রিট ব্লক, কংক্রিট পেডমেন্ট ইত্যাদি রোলার দিয়ে চাপ দিয়ে কম্প্যাক্ট করা হয় বলে এ ধরনের কংক্রিটকে রোলার কম্প্যাক্টেড কংক্রিট বা রোলক্রিট বলা হয়ে থাকে। স্বল্প সিমেন্টের কংক্রিট ব্যবহৃত হয়।
৬. পারভিয়াস কংক্রিট : সার্ফেস পানি বা ভূপৃষ্ঠের পানি চলাচলে কংক্রিটের উপাদান ফাইন এগ্রিগেট সম্পূর্ণ অথবা আংশিক গ্যাপ প্রভিশানে কংক্রিটে ছিদ্রের জাল সম্বলিত কংক্রিট। সেটিং-এর পর এতে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ পরিমাণ ফাঁকা ফাঁপা অংশ থাকে যা পানি প্রবাহে সাহায্য করে। এই কংক্রিটের খুব একটা রক্ষণাবেক্ষণ লাগে না।
শুধুমাত্র ফাঁপা কাঠামো যাতে বন্ধ বা জ্যাম না হয়ে যায় তার জন্য রক্ষণাবেক্ষণ দরকার। কনস্ট্রাকশনের পূর্বে সাইটের চারপাশে ড্রেনে রাখতে হবে যাতে করে কংক্রিটের ফাপা অংশে ময়লা বা অন্যকিছু জমতে না পারে।
৭. সেলফ কমপ্যান্টিং কংক্রিট এই কংক্রিটে কোনো ভাইব্রেশন লাগে না। নিজস্ব ভারেই এটি কমপ্যাক্ট হয়ে থাকে। একে অনেক সময় সেলফ কনসোলিডেটেড কংক্রিট বা ফ্লোইং কংক্রিট বলে। এই উচ্চ ক্ষমতার কংক্রিট। কিন্তু এই কংক্রিটের কার্যপযোগীতা বেশি।
অত্যন্ত তারল্য প্রবাহ ছকে সাধারণত ৬৫০-৭৫০ মি. মি. কোনো ভাইব্রেটরের দরকার পড়ে না। ফলে সহজে স্থাপন করা যায়, ৮০ শতাংশ দ্রুত ঢালা যায় এবং ৫০ শতাংশ মজুরি খরচ কমিয়ে দেয়। যেখানে ভাইব্রেশন করা সম্ভব না সেখানে এটি ব্যবহার করা হয়। যেমন : মাটির নিচে, গভীর কূপে বা সমুদ্রের নিচে।
৮. প্রিস্ট্রেসড কংক্রিট নির্দিষ্ট অনুপাতে জমাট বাঁধাইকারী উপাদান, মোটা দানা উপাদান, সরু দানা উপাদান, প্রিস্ট্রেসিং রিইনফোর্সিং ওইয়ার (স্ট্যান্ড) এবং পানির সংমিশ্রণে রাসায়নিকভাবে তৈরিকৃত জমাটবদ্ধ কংক্রিটই প্রিস্ট্রেসড কংক্রিট।
বৃহৎ নির্মাণ কাজে বা যেখানে স্থানান্তর খরচ কম এবং সাটারিং দুঃসাধ্য, সেখানে কাঠামো নির্মানে প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট ব্যবহারে আর্থিক সাশ্রয় হয়। দালানের বিভিন্ন অংশ যেমন- কলাম, বিম, স্ল্যাব ইত্যাদি নির্মাণে প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট ব্যবহার করা হয়।
৬.৩ কংক্রিটের ব্যবহার
প্লেইন সিমেন্ট কংক্রিট (PCC) সিমেন্ট, মোটা দানা উপাদান, সরু দানা উপাদান এবং পানির সংমিশ্রনে তৈরিকৃত কংক্রিটকে প্লেইন সিমেন্ট কংক্রিট বা প্লেইন কংক্রিট বলে। এ জাতীয় কংক্রিটের চাপ সহ্য ক্ষমতা বেশির কারণে যেখানে কংক্রিটকে বেশি চাপ সহ্য করতে হয়, সেখানে এটা ব্যবহার করা হয়। যেমন- কাঠামোর বুনিয়াদে বেড ব্লক, মেঝে, পুরু গ্রাভিটি ড্যাম, গ্রাভিটি রিটেইনিং ওয়াল, আর্চ ইত্যাদি।
আর.সি.সি সিমেন্ট কংক্রিট (RCC) : স্টিল বা রড (রি-বার/রিইনফোর্সিং বার) এর শিয়ার এবং টানা বল
সহ্য করার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে কাঠামোর যে সমস্ত মেম্বারকে টানা বল এবং শিয়ার সহ্য করতে হয়, সে সমস্ত জায়গায় প্লেইন কংক্রিটের উপাদানের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় রড (রি-বার/ রিইনফোর্সিং বার) সহযোগে আর.সি.সি কংক্রিট ব্যবহৃত হয়।
যেমন- বিম, স্ল্যাব, লিন্টেল, আর্চ, সানশেড, রেলিং, ড্রপওয়াল, প্যারাপেট, সিঁড়ি, পানির ট্যাংক, ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা ইত্যাদি। তাছাড়া মাত্রাতিরিক্ত কম্প্রেশন প্রতিরোধে কাঠামো মেম্বারে প্লেইন কংক্রিটের উপাদানের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় স্টিল বা রড (রি-বার/রিইনফোর্সিং বার) সহযোগে আর.সি.সি কংক্রিট ব্যবহৃত হয়। যেমন- কলাম বিষ।
অপরদিকে বৃহৎ নির্মাণ কাজে বা যেখানে স্থানান্তর খরচ কম এবং সাটারিং দুঃসাধ্য, সেখানে কাঠামো নির্মাণে প্রি-ট্রেসড কংক্রিট ব্যবহারে আর্থিক সাশ্রয় হয়। দালানের বিভিন্ন অংশ যেমন- ব্রিজ, কলাম, বিম, স্ল্যাব ইত্যাদি নির্মাণে প্রি-ট্রেসড কংক্রিট ব্যবহার করা হয়। কাঠামোর বুনিয়াদে বেড রক, জলছাদে লাইম কংক্রিট ব্যবহার করা হয়।
কংক্রিটের মধ্যে মূল উপাদান থাকে সিমেন্ট, বালু ও পাথর। আর এদের সহায়ক হিসেবে থাকে পানি ও এভমিক্সার। ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ভাষাতে সিমেন্ট হলো বন্ডিং এজেন্ট। বালু হলো ফাইন এগ্রিগেট এবং পাথর হলো কোর্স এগ্রিগেট। পানি সিমেন্টের সাথে বিক্রিয়া করে সিমেন্ট + বালি + পাথরকে একটি উপাদানে বেধে ফেলে। পুরো উপাদান হয় পাথরের মতো শক্ত। সিমেন্ট, বালি, পাথর, পানি ও এডমিক্সারের অনুপাতের উপরই নির্ভর করে কংক্রিট এর ক্ষমতা ও শক্তি।
মিক্স ডিজাইন
আমরা সাধারণ ভাষাতে সিমেন্ট, পাথর, বালু বলে থাকি। যেমন ১:২:৩ অথবা ১:১.৫:৩ অথবা ১:২:৪ । কিন্তু এই অনুপাতই সবকিছু না। সিমেন্ট পানির অনুপাত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আবার পাথরের মধ্যে বিভিন্ন সাইজের পাথরের মিশ্রণও খুব গুরুত্বপূর্ণ যেমন সকল পাথর যদি ২০ মিলি সাইজের হয়, তাহলে কিন্তু ভালো হবে না। এর চেয়ে ছোট সাইজের মিশ্রণ থাকতে হবে পাথরের মধ্যে।
এই জন্যই কিন্তু পাথরের সাইজের সাথে একটি কথা যুক্ত থাকে। তা হলো “ডাউন গ্রেডেড”। অর্থাৎ এর চেয়ে ছোট সাইজের পাথর এবং সেটাও সঠিকভাবে থাকতে হবে। এই মিশ্রণের অনুপাত বের করার পদ্ধতিকেই মিক্স ডিজাইন বলে।
মিক্স ডিজাইনের জন্য বিভিন্ন গবেষকের বিভিন্ন পদ্ধতি থাকিলেও বর্তমানে এসিআই মিক্স ডিজাইন বেশি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও কিছু পদ্ধতি পুরানো হলেও বেশ প্রচলিত। যেমন :
১. খুব কম পরিমাণ ফাঁকা বা ভয়েডের অবস্থান। এতে খেয়াল রাখতে হবে যেন মিক্সারের মধ্যে যেন গ্যাপ বা শূন্যতা (void) না থাকে। অর্থাৎ এতে ঘনত্ব বেশি থাকে।
২. ফুলার ও থমসন পদ্ধতি : এটিও ঘনত্ব বাড়ানোর একটি পদ্ধতি। তাদের সুত্রানুসারে p=100 X
root (d/D) p=d এর চেয়ে ছোট উপাদানের শতকরা হার, d= ছোট উপাদানের সাইজ এবং D= বড় উপাদানের সাইজ। 20 মিমি যদি বড় সাইজের হয়, 4.75 যদি ছোট সাইজের হয়, তাহলে 4.75 এর চেয়ে ছোট সাইজের উপাদান থাকতে হবে 50 শতাংশ।
৩. ফাইননেস মডুলাস পদ্ধতি :
p=100( A- B ) / (AC)
P= ফাইন এগ্রিগেটের অনুপাত মোট এগ্রিগেটের সাথে
A= কোর্স এগ্রিগেটের ফাইননেস মডুলাস
B= টেবিল অনুসারে, সিমেন্টের সাথে সম্পর্কিত সর্বোচ্চ অনুমোদিত ফাইননেস মডুলাস
C= ফাইন এগ্রিগেটের ফাইননেস মডুলাস
সিমেন্ট, বালু, পাথর, গানি ও এডমিক্সারের অনুপাতের উপরই নির্ভর করে কংক্রিটের ক্ষমতা ও শক্তি।
আদর্শ কংক্রিট মিশ্রণের নমুনা অনুপাত :
প্র বা ২৭ ঘনফুট কগ্রিট তৈরি করতে যে পরিমাণ মালামাল লাগে।
# ৩০০০ পি.এস.আই-এর জন্য :
সিমেন্ট ৫১৭ পাউন্ড
বালু ১৫৬০ পাউন্ড
পাথর ১৬০০ পাউন্ড পানি ৩২-৩৪ গ্যালন
# 8000 পি.এস.আই-এর জন্য
সিয়েন্ট ৬১১ পাউন্ড
বালু ১৪৫০ পাউন্ড
পাথর ১৬০০ পাউন্ড
পানি ৩৩-৩৫ গ্যালন
৬.৫ কাটি স্থানান্তর পদ্ধতি
নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে কংক্রিট স্থানার করা হয় ১. স্টিল কড়াই (Steel Pan
২. হস্তচালিত গাড়ি (Wheel barrow)
৩. হয়েস্ট বা ক্ষিপ (Hoist or Skip)
- (Tripper)
৫. ট্রাক (Truck)
৬. ক্যাবলওয়ে (Cable way)
৭. কেন (Crane)
৮. শ্যুট (Chute)
১. পাম্পিং (Pumping)
কংক্রিট স্থাপনের নিয়ম
কংক্রিট স্থাপন প্রাথমিক জমাট বাঁধার সময় আরম্ভ হওয়ার পূর্বেই কংক্রিট স্থাপন এবং কম্পেকশন করা উচিত। কংক্রিট স্থাপনায় বিশেষ সতকর্তা অবলম্বন করা প্রয়োজন। উঁচু হতে কংক্রিট ফেলে দিলে অপেক্ষাকৃত ভারি কণাগুলো নিচে পড়ে যায় এবং কংক্রিট উপাদানসমূহের সেগ্রিগেশন ঘটে। যা কংক্রিটের ক্ষেত্রে ভালো নয় । তাই অনুভূমিক স্তরে স্তরে কংক্রিট স্থাপন করতে হয়। এ জন্য কোনো অবস্থাতেই এক মিটারের বেশি উঁচু স্থান হতে কংক্রিট ফেলা উচিত নয়।
কংক্রিট স্থাপনের পূর্বে ফর্মওয়ার্ক শক্ত এবং ঠিক অবস্থানে আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ফর্মওয়ার্কের অন্তঃস্থ পাশ পরিষ্কার ও তৈলাক্ত হতে হবে। জোড় সংখ্যক স্তরে কংক্রিট স্থাপন করতে হবে। প্রতি স্তরে ১৫-৩০ সেমি পুরুত্বের কংক্রিট স্থাপন করতে হবে। একটি স্তরকে কম্পেকশন করার পর পরবর্তী স্তরের কংক্রিট স্থাপন করতে হবে।
শক্ত হওয়ার পূর্বে কংক্রিট স্থাপনের কাজ শেষ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই কংক্রিট মিশ্রণে পুনরায় পানি দেওয়া যাবে না। কম্পেকশন করার সময় যাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কংক্রিটকে পুনঃস্থাপন করতে না হয়। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যথায় সাটারিং, রিইনফোর্সমেন্ট এবং অন্যান্য দ্রব্য স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কংক্রিট স্থাপনার সময় নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলো মেনে চলা উচিত :
*অবিরামভাবে কংক্রিট স্থাপন করতে হবে। অনিয়মিত এবং খাড়াভাবে ফেলা যাবে না।
*সেগ্রিগেশন পরিহার করতে হবে। তাই ১ মিটারের বেশি উঁচু স্থান হতে কংক্রিট ফেলা যাবে না।
*কংক্রিট স্থাপনের পূর্বেই ফর্মওয়ার্ককে ভালোভাবে তৈলাক্ত করতে হবে।
*কংক্রিট স্থাপনার সময় ফর্মওয়ার্ক ও রিইনফোর্সমেন্টকে আলোড়িত করা চলবে না।
*বৃষ্টির মধ্যে কংক্রিট স্থাপন করা উচিত নয়।
*ম্যাস কংক্রিটের ক্ষেত্রে প্রতি স্তরে ৩০-৪৫ সেমি এবং আরসিসির ক্ষেত্রে ১৫-৩০ সেমির বেশি
*পুরুত্বে কংক্রিট স্থাপন করতে নেই।
* হাঁটা অবস্থায় অর্থাৎ দাঁড়িয়ে কংক্রিট ঢালতে নেই। যতদূর সম্ভব খুব নিকট থেকে (অনধিক উচ্চতা-১ মি) কংক্রিট ঢালতে হবে।
কংক্রিট দৃঢ়করণ পদ্ধতি
* কংক্রিট দৃঢ়করণ করার ক্ষেত্রে নিম্ন লিখিত বিষয়সমূহ বিবেচনায় রাখতে হয়, যেমন-
* সার্ফেস ঠিক আছে।
* ড্রয়িং অনুসারে লেভেল ও মার্কিং।
* ফর্ম ওয়ার্ক বা শাটার। ।
* ফিনিশ লেভেল ।
* সিমেন্ট, বালু ও এগ্রিগেটের মিশ্রণ অনুপাত ।
* ঢালার স্থানের উচ্চতা এক মিটারের বেশি হবে না।
*ভালো ফিনিশিং-এর জন্য এর উপরে আলাদা সিমেন্টের গোলা দেয়া যাবে না।
* এগ্রিগেটের টেস্ট রিপোর্ট বা গুণাগুণ।
* উপযুক্ত যন্ত্রপাতি দিয়ে এর সার্ফেস ঠিক করতে হবে।
*কংক্রিটের থিকনেস বা পুরুত্ব ঠিক আছে।
*কিউরিং ঠিকমতো হচ্ছে।

অনুশীলনী – ৬
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১। কংক্রিট কাকে বলে?
২। ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ভাষায় সিমেন্ট কী?
৩। মিক্স ডিজাইন কাকে বলে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১। কংক্রিট স্থানান্তর কীভাবে করে?
২। ব্যবহারের ভিত্তিতে কংক্রিট কত প্রকার ও কী কী?
রচনামূলক
১। কংক্রিটের ব্যবহার বর্ণনা কর।
২। কংক্রিটের ক্ষমতা কিসের উপর নির্ভর করে বর্ণনা কর।
৩। মিক্সডিজাইন পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর।
৪। কংক্রিট দৃঢ়করণ পদ্ধতিসমূহ বর্ণনা কর।
আরও দেখুনঃ