আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের চুনকাম।
বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের চুনকাম
চুনকামের সংগা
কাঠামোকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ব্যবহার ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য প্লাস্টারকৃত পৃষ্ঠদেশে পাথুরে চুন, কলিচুন, পানি ও আঠা জাতীয় পদার্থ (যমন- গাম বা গু) এবং নীল ইত্যাদি পদার্থের সংমিশ্রনে যে প্রলেপ দেয়া হয়, তাহাকে চুনকাম (White Wash) বলে।
চুনকামের উদ্দেশ্য
১. কাঠামোকে পৃষ্ঠদেশকে কার্বন ডাই-অক্সাইডের প্রতিক্রিয়া হতে রক্ষা করার জন্য।
২. কাঠামোতে শ্যাওলা বা সবুজ জাতীয় গাছ জন্মানো প্রতিরোধ করার জন্য ।
৩. আলোকরশ্মির তেজস্ক্রিয় কমানোর জন্য।
৪. ইমারতের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য ।
৫. খরকে জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য।
চুনকামের উপাদান
১. পাথুরে চুন।
২. কলিচুন বা ঝিনুক ফোটানো চুন।
৩. গাম বা গু (আঠা জাতীয় পদার্থ)।
8.নীল
৫. প্রয়োজনমতো বিশুদ্ধ পানি।
চুনকাম করার জন্য প্রবণ প্রস্তুত প্রণালি
পানির সাথে চুন মিশিয়ে এই দ্রবণ তৈরি করা হয়। সাধারণত ২ ভাগ পাথুরে চুন এবং ১ ভাগ কলিচুন প্রয়োজনীয় পানির সাথে মিশিয়ে নিতে হয়। চুনকাম করার ২৪ ঘন্টা আগে এই দ্রবণ তৈরি করতে হয় এবং ব্যবহারের আগে দ্রবণকে কাপড়ের সাহায্যে ছেঁকে নিতে হয়।
প্রতি কেজি পাথুরে চুনের সাথে ৫ লিটার পানি মিশাতে হয়। প্রতি ৩৭ কেজি চুনে ২৫০ গ্রাম হিসাবে গাম বা গ্লু ব্যবহার করতে হবে। অথবা প্রতি ঘনমিটার লাইম ক্রিমের জন্য ১ কেজি গাম ব্যবহার করতে হবে। সাধারণত তরল গাম ব্যবহার করতে হয়।
তরল নাম না পাওয়া গেলে গরম পানিতে গলিয়ে দ্রবণে দেয়া হয়। চুনকামের প্রবণকে শক্ত ও ক্ষয়রোধী করার জন্য ১০ কেজি চুনের সাথে ১:৩ কেজি সাধারন লবণ মিশিয়ে দেয়া হয়। কাঠামোর পৃষ্ঠকে চকচকে সুন্দর করার জন্য দ্রবণের সাথে প্রতি কেজি চুনে ৩ গ্রাম নীল দেয়া হয়।
চুনকাম করার জন্য দেয়ালের গাত্র প্রস্তুত করার পদ্ধতি
দেয়ালের বা কাঠামোর প্লাস্টার বা আন্তর ভালোভাবে শুকানোর পর চুনকাম করা যায়। চুনকাম করার আগে পৃষ্ঠদেশকে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। আগের সব ধরনের ময়লা বা অনিষ্টকর উপাদান বা ধুলা-বালি ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং ভালোভাবে শুকানোর পর চুনকাম করতে হবে। পুরাতন চুনকামের উপর নতুনভাবে চুনকামের আগে পুরাতন চুনকাম উত্তমরূপে তুলে ফেলতে হবে এবং পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
চুনকাম করার পদ্ধতি
দেয়ালের বা কাঠামোর প্লাস্টার বা আস্তরকৃত পৃষ্ঠের উপর ব্রাস বা তুলি দিয়ে চুনকাম প্রয়োগ করা হয়। চুনকামের সময় একবার উপর হতে নিচে এবং পরের বার নিচ থেকে উপরে তুলি টানতে হয়। তারপর ডান হতে বামে এবং বাম হতে ডানে তুলি টেনে প্রথম কোট সম্পূর্ণ করতে হয়।
এভাবে প্রথম কোট শুকনোর পর দ্বিতীয় কোট, তারপর তৃতীয় কোট চুনকাম করতে হয়। সাধারণত নতুন কাজে তিন কোট এবং পুরাতন কাজে দুই কোট চুনকাম করতে হয়। দেয়ালের আগে সিলিং-এর চুনকাম করতে হয়। চুনকাম দ্রবণের জমে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে চুনকাম দ্রবণকে মাঝে মধ্যে নাড়া দিতে হয়।
অনুশীলনী – ২১
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। চুনকাম কাকে বলে?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। চুনকামের উদ্দেশ্য লেখ।
২। চুনকাম করার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান কয়টি ও কী কী?
৩। চুনকাম করার জন্য দেয়ালের গাত্র প্রস্তুত করার পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
৪। চুনকাম করার পদ্ধতি লেখ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। চুনকাম করার জন্য প্রবণ প্রস্তুত প্রণালি বর্ণনা কর।
আরও দেখুনঃ