আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের জলছাদ।
বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের জলছাদ
জলছাদের উপাদান ও অনুপাত
বিল্ডংয়ের সর্বোচ্চ তলার ছাদকে রোদ বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং ঘরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ছাদের উপর চুন, সুরকি ও খোয়ার সাহায্যে তিন ইঞ্চি পুরু একটি আলাদা আস্তরণ দেয়া হয়। একে জলছাদ বলে।
জলছাদের ব্যবহার
বিল্ডংয়ের সর্বোচ্চ তলার ছাদকে রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং ঘরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জলছাদ ব্যবহার করা হয়।
জলছাদের প্রয়োজনীয়তা:
(১) বাড়ির ছাদের উপর বৃষ্টির পানি জমা হলে পানি চুইয়ে ছাদের রডকে মরিচা ধরাতে পারে। এ জন্য জলছাদ দেয়া হয়।
(২) ছাদ আর্দ্রতামুক্ত রাখা।
৩) রৌদ্রের তাপের হাত থেকে গৃহবাসীকে রক্ষা করা।
৪) প্রচন্ড রৌদ্রতাপে মূল ছাদকে ফেটে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা।

জলছাদ তৈরির পদ্ধতি
১. জলছাদ নির্মাণের জন্য প্রথমে খোৱা, সুরকি ও চুন প্রয়োজনতো মিশিয়ে নিতে হয়।
২. প্রথম শ্রেনির ইটের খোয়া তৈরি করতে হয় যার মাপ ০.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। ৩. খোয়াগুলো প্রথমে ১ ফুট করে বিছিয়ে এর উপর আলাদাভাবে তৈরি করা চুন ও সুরকির মিশ্রণ মেশানো হয়।
৪. তারপর বেলচা দিয়ে উল্টে-পাল্টে মিশ্রনের উপাদানগুলোকে ভালোভাবে মেশানো হয়।
৫. এরপর পাইপ দিয়ে মিশ্রণের উপর প্রয়োজনীয় পানি দেয়া হয় এবং একই সাথে বেলচা দিয়ে উল্টে দিতে হয়।
৬. দৈনিক সকাল-বিকাল মোট দু’বার করে মসলা কাটার এ ব্যবস্থা ক্রমাগত পাঁচ বা সাত দিন করে মিশ্রনকে কাঁদার মতো নরম করে ফেলা হয়।
৭. শেষ পর্যায়ে মিশ্রণের সাথে চিটাগুড়, মেথি ইত্যাদি যোগ করা হয়। প্রতি ঘন মিটার খোয়ার সাথে প্রায় ৩ কেজি চিটাগুড় এবং ১৫০ গ্রাম মেধি ভিজানো পানি মেশানো যায়। নরম এ মসলা মূল ছাদের উপর এমনভাবে বিছাতে হয় যাতে পেটানোর পর ছাদের প্রান্তে কমপক্ষে তিন ইঞ্চি বজায় থাকে।
৮. জলছাদের ঢাল সাধারণত প্রতি ৫ ফুটে ১ ইঞ্চি অর্থাৎ ১:৬০ রাখা হয়।
৯. মসলা বিছানোর চার পাঁচ দিন পর ছাদ পিটানোর কাজ শুরু করা হয়। পিটানোর সময় লক্ষ্য রাখতে হয় যাতে ছাদ উঁচু না থাকে এবং ঢালের সমতা বজায় থাকে।
১০. ছাদের পানি নিষ্কাশন পাইপের সংযোগস্থলে বিশেষ সতর্কতার সাথে মসলা ফেলতে হবে যাতে ছাদের সাম্যতা বজায় থাকে। ছাদের পানি নিষ্কাশক পাইপের সংযোগস্থলে বিশেষ সতর্কতার সাথে পিটাতে হয়। কারণ জলছাদের জুটির জন্য এখানে পানি চুয়ানোর আশঙ্কা থাকে।
১১. ছাদ পেটানোর সময় প্রতি ঘন মিটার খোয়ার হিসাবে ১১/২ কেজি চিটাগুড় ও ১৫ গ্রাম মেথির পানি চুনের পানিতে গুলে রেখে দেয়। পিটানোর কাজ চলাকালীন ঐ পানি বারবার ছিটিয়ে দেয়া হয়।
১২. পিটানোর সময় চুন-সুরকির গোলা উপরে ভেসে উঠলে পাঠা দিয়ে সমান করে দেয়া হয় এবং ধীরে ধীরে ছাদ পিটিয়ে ঢাল মিলিয়ে নেয়া হয়।
অনুশীলনী – ১৫
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। জলছাদ কাকে বলে?
২। জলছাদের ঢাল কত হয়?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১। জলছাদ ব্যাখ্যা কর।
২। জলছাদের ব্যবহার লেখ।
৩। জলছাদের প্রয়োজনীয়তা কী?
রচনামূলক প্রশ্ন :
১। জলছাদ কেন দেয়া হয়।
২। জলছাদ তৈরির পদ্ধতি বর্ণনা কর।
আরও দেখুনঃ