আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বীম।
বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বীম
বীমের সঙ্গাঃ
যে অনুভূমিক কাঠামো এক বা একাধিক সাপোর্টের উপর অবস্থান করে তার উপর আরোপিত লোডকে সাপোর্টে স্থানাক্ষর করে, তাকে বীম (Bearn) বলে। খুঁটি, কলাম, পিলার, দেয়াল ইত্যাদি সাপোর্ট হিসাবে ব্যবহার করা হয়। বীমের উপর লোডগুলি নিম্নমুখী চাপ দেয় এবং প্রতিরোধ করার জন্য সাপোর্ট সমান ও বিপরীতমুখী অর্থাৎ উর্ধমুখী চাপ দেয়।
বীজের প্রয়োজনীয়
নিম্নলিখিত কারণে বীম প্রয়োজনীয়
১. বীম ছাদ বা মেঝে এবং এর উপররস্থ দোডগুলোকে পার্শ্বস্থ সাপোর্টে (কলাম, খুঁটি বা দেয়াল) এ স্থানান্তর করে।
২. বীম সম্পূর্ণ কাঠামোটিকে দৃঢ়বদ্ধ রাখে।
৩. বীম থাকায় কাঠামোর মেঝেতে প্রয়োজনানুযায়ী কক্ষ নির্মাণ সহজ হয়।
৪. বীম থাকার কারণে মেঝের গুরুত্ব বৃদ্ধি না করে এর উপর অতিরিক্ত লোড চাপানো সহজ হয়।
বীমের প্রকারভেদ
বীমকে প্রধানত দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।
১) স্ট্যাটিকালি ডিটারমিনেট বীমঃ যে সমস্ত বীমের প্রতিক্রিয়া ভারসাম্যের নীতি স্টেটিক কন্ডিশন অফ ইকুইলিব্রিয়াম অনুযায়ী সমাধান করা যায়, তাদেরকে স্ট্যাটিকালি ডিটারমিনেট বীম বলে। যেমন:
ক) সিম্পলি সাপোর্টেড বীম
খ) ক্যান্টিলিভার বীম
গ) ওভারহ্যাঙ্গিং বীম
২) স্ট্যাটিকালি ইনডিটারমিনেট বীমঃ যে সমস্ত বীমের প্রতিক্রিয়া শুধুমাত্র ভারসাম্যের নীতি অনুযায়ী সমাধান করা সম্ভব হয় না, তাদেরকে স্ট্যাটিকালি ইনডিটারমিনেট বীম বলে। যেমন:
ক) কন্টিনিউয়াস বীম
খ) সেমি-কন্টিনিউয়াস ম
গ) ফিক্সড অর রিস্ট্রেইন্ড বীম
নির্মান সামগ্রীর উপর ভিত্তি করে বীমকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-
১. কাঠের বীম (Wooden Beam)ঃ কাঠ দিয়ে তৈরি বীম কে কাঠের বীম বলে। কাঠের বীম কম দৈর্ঘ্যের পরি সরে ব্যবহার করা হয় স্থায়ীত্ব তুলনা মূলক ভাবে কম। আগুনে পুড়ে যেতে পারে। এক কাঠের সহজে ঘুনে ধরে।
২. স্টিলের বীম (Steel Beam)ঃ চিলের তৈরি বীম কে ষ্টিল বীম বলে। এটি বড় দৈর্ঘ্যের পরিসরে ব্যবহার
করা হয়। এই বীম দীর্ঘস্থায়ী হয়।
৩. আরসিসি (RCC Beam): সিমেন্ট কংক্রিট এবং রেইনফেসিমেন্ট (রড) এর মাধ্যমে এই বীম তৈরী করা হয়। এই বীম যে কোন দৈর্ঘ্যের নির্মাণ করা যায়। স্থায়ীত্ব বেশী এবং ব্যাপক ব্যবহার করা হয়।
সাপোর্টের প্রকৃতি অনুসারে বীমকে ৫ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
রিইনফোর্সমেন্ট ব্যবহারের ভিত্তিতে আরসিসি বীমকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা-
(১) সিংগলি রিইনফোর্সড বীম (Single reinforced beam)ঃ এ ধরনের বীমে কংক্রিট কম্প্রেসিভ স্ট্রেস এবং স্টিল টেনসাইল স্ট্রেস বহন করে। কংক্রীটের কম্প্রেসিভ স্ট্রেস এবং স্টিলের টেনসাইল স্ট্রেস বহন করার ক্ষমতার আওতার মধ্যে বীম ডিজাইন হয়ে থাকে অর্থাৎ শুধু টেনসাইল স্ট্রেস বহনের জন্যই রিইনফোর্সমেন্ট ব্যবহৃত হয়।
২) ভাবল রিইনফোর্সড বীম (Doubly reinforced beam)ঃ এ ধরনের বীমে কংক্রিট বহন ক্ষমতার অতিরিক্ত কম্প্রেসিভ ট্রেস চেক দেয়ার জন্য কম্প্রেসিভ জোনে স্টীল দেয়া হয়। আর্কিটেকচারাল বা স্ট্রাকচারাল কোনো কারণে বীম সেকশন বিশেষ করে গভীরতা কমে গেলে কংক্রীট এরিয়া কমে যায়। এ কমে যাওয়া বা ঘাটতি পূরণে কম্প্রেশন জোনে প্রয়োজনীয় স্টিল ব্যবহার করে কংক্রীটের শক্তি বৃদ্ধি করা एम।
৩) টি বীম (Tee beam) যখন বীম এবং তার উপরিস্থিত ল্যাব একত্রে ডিজাইন ও গঠন করা হয়, তখন ঐ স্ল্যাবটিও বীমের অংশ হিসেবে কাজ করে। এরূপ ক্ষেত্রে প্রতিটি বীম তার উভয় দিকে অবস্থিত পরবর্তী বীম পর্যন্ত দূরত্বের অর্ধাংশের লোড বা ওজন বহন করে। প্রতিটি বীমকে তার উভয় দিকের অর্ধাংশের স্ল্যাব গঠন করলে তা T এর মতো দেখায় বলে একে Tee bearn বলে ।
কাঠ,স্টীল ও আরসিসিনবীমের মধ্যে তুলনাঃ
অনুশীলনী – ১২
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। বীম কাকে বলে?
২। স্ট্যাটিকালি ডিটারমিনেট বীম কাকে বলে?
৩। স্ট্যাটিকালি ইনডিটারমিনেট বীম কাকে বলে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। বীমের প্রয়োজনীয়তা লেখ।
২। বীম প্রধানত কয় প্রকার ও কী কী?
৩। নির্মাণ সামগ্রী অনুযায়ী বীমের প্রকারভেদ দেখ ।
৪। সাপোর্টের প্রকৃতি অনুযায়ী বীম কয় প্রকার ও কী কী?

রচনামূলক প্রশ্ন :
১। সাপোর্টের প্রকৃতি অনুযায়ী বীমের প্রকারভেদ লেখ।
২। রিইনফোর্সমেন্ট ব্যবহারের ভিত্তিতে আরসিসি বীমের প্রকারভেদ লেখ।
৩। কাঠ, স্টিল ও আরসিসি বীমের মধ্যে তুলনা ছকের মাধ্যমে লেখ ।
আরও দেখুনঃ