আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় সেকিং, স্মুথিং টুলস এবং মিক্সিং মেশিন । শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই। তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষাক্রম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।
Table of Contents
সেকিং, স্মুথিং টুলস এবং মিক্সিং মেশিন
সদ্য স্থাপিত বা প্লেসিং করা কংক্রিট থেকে বাতাসের বুদ্বুদ দূর করার মাধ্যমে কংক্রিটকে কম্প্যাকশন বা দৃঢ়করণ করা হয়। ইহা দুই ভাবে করা যায়। যথা-
১। হ্যান্ড টুলস দ্বারা
২। মেশিন দ্বারা
প্রায় ফিনিশিং পর্যায়ে এসে কংক্রিট স্মৃথিং-এর প্রয়োজন পড়ে। বর্তমানে হ্যান্ড টুলসের পরিবর্তে বড় বড় কাজে স্মথিং মেশিন ব্যবহার করা হয়। কংক্রিট মিশানোর বেলাও বর্তমানে কংক্রিট মিকচার মেশিনের বহুল ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়।
ভাইব্রেটর যন্ত্রের বর্ণনা
সদ্য প্রস্তুতকৃত কংক্রিটকে আটকে পড়া বাতাস এবং অতিরিক্ত পানি বের করে দিয়ে কংক্রিটকে দৃঢ় করতে ভাইব্রেটর ব্যবহার করা হয়। কংক্রিট ভাইব্রেটরকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১। বাহ্যিক ভাইব্রেটর (External Vibrators)
২। অভ্যন্তরীণ ভাইব্রেটর (Internal Vibrators)
১. বাহ্যিক ভাইব্রেটর (External Vibrators): এ ধরনের ভাইব্রেটর ব্রাকেট (bracket) ক্ল্যাম্প (clamp) দ্বারা ফর্মওয়ার্কের সাথে আটকানো হয় এবং ফর্মওয়ার্কে নাড়া দিয়ে কংক্রিটে ভাইব্রেশন বা কম্পন সৃষ্টি করা হয়। এগুলো হাইড্রোলিক (hydraulic- জলচালিত), নিউম্যাটিক (pneumatic বায়ুচালিত বিদ্যুতিক শক্তিচালিত হয়ে থাকে।
২. অভ্যন্তরীণ ভাইব্রেটর (Internal Vibrators) এতে একটি স্টিলের সিলিন্ডার থাকে যা দেখতে অনেকটা ক্রিকেট খেলার ব্যাটের হাতলের আকার। একে ভাইব্রেটিং হেড বলে। এই প্রান্ত সম্পূর্ণরূপে কংক্রিটে ডুবিয়ে দিয়ে অপর প্রান্ত একটি হোজ দ্বারা ইঞ্জিনের সাথে যুক্ত থাকে। ফলে ভাইব্রেটিং সৃষ্টি হয়। এটি আবার দুই প্রকারের হয়ে থাকে। যথা-
ক. ফ্লেক্স শ্যাফট ভাইব্রেটর (Flex-Shaft Vibratiors): এতে একটি মোটরের সাথে নমনীয় বা ফ্লেক্সিবল শ্যাফট কেসিং থাকে যাতে তার এক প্রান্তে হেড থাকে। মোটর স্যাফট নাড়ায় ফলে হেডও নড়ে। এদের ব্যবহারের বিশেষ ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন- পাতলা স্লাব, সরু দেয়াল, ভিত্তি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে কংক্রিটের স্লাম্প ৩” বা বেশি হতে হয়। ঘন রড যেখানে ব্যবহার হয় সেখানেও এ ধরনের ভাইব্রেট উপযোগী।
খ. হাই-সাইকেল ভাইব্রেটর (High-Cycle Vibrators): কংক্রিট নির্মাণে ১” থেকে ৩” স্লাম্প-এর জন্য উপযোগী। এই ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রে একটি মাখা মুড়ানো মোটর একটি হ্যান্ডেল হোসের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক উৎসের সাথে যুক্ত থাকে। এটি দেখতে ছোট কিন্তু প্রচুর শক্তি উৎপাদন করে।
এছাড়া ভাইব্রেটিং বা শেক টেবিল (Vibrating or Shake Tables) ব্যবহার করা হয় গাড়ি, বিমান এবং সমরাস্ত্র কারখানাতে, মূলত পরীক্ষা করার জন্য একটি পণ্য কী পরিমাণ ভাইব্রেশন নিতে পারবে। তবে প্রি-কাস্ট কংক্রিট তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।
ভাইব্রেটর যন্ত্রের ব্যবহার
১। ভাইব্রেশন কংক্রিটের চাপ শক্তি বাড়ায় এবং কংক্রিট ও রডের মধ্যকার বন্ধন মজবুত করে কংক্রিটের প্রবেশ্যতা কমিয়ে আনে।
২। হানি কম্বিং (কংক্রিটে ফোকর থাকা), কোল্ড জয়েন্ট, সেগ্রিগেশন (কংক্রিট উপাদান ছড়িয়ে আলাদা হয়ে পড়া) এবং আটকে পড়া বাতাসের পরিমাণ কমিয়ে আনে।
৩। কংক্রিট তরলের মতো আচরণ করে।
৪। বৃহদাকার কাজে সমতল পৃষ্ঠের উপর ভাইব্রেশন করতে অভ্যন্তরীণ ভাইব্রেটর এবং কম পুরুত্বের ছোট কাজে বাহ্যিক ভাইব্রেটর ব্যবহার করা হয়।
যেভাবে ভাইব্রেটর দিয়ে ভাইব্রেশন করা হয়
১। ভাইব্রেটরকে উলম্বভাবে কংক্রিটে প্রবেশ করাতে হবে, খুব দ্রুত ভিতরে ঢুকিয়ে দিতে হবে এবং আগের ঢালা কংক্রিটে ৬” ঢুকাতে হবে।
২। ৫ থেকে ১৫ সেকেন্ড কংক্রিটের মধ্যে ধরে রাখতে হবে।
৩। ভাইব্রেটর এমন গতিতে তুলতে হবে যেন ৪ ফুটের কংক্রিট থেকে তুলতে ১৫ সেকেন্ড সময় লাগে, বা প্রতি ১ সেকেন্ডে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ তুলতে হবে।
বিশেষ কৌশল
১। এমনভাবে ভাইব্রেটর ব্যবহার করতে হবে যাতে চিত্রে দেখানো গোলাকার ক্রিয়াশীল এলাকা একটি আরেকটির উপর চলে যায়। ক্রিয়াশীল এলাকা বোঝার জন্য কংক্রিটের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
২। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভাইব্রেটর এবং বেশি স্লাম্প বিশিষ্ট কংক্রিটের ক্রিয়াশীল এলাকা বড় হয়।
৩। থাম রুল ক্রিয়াশীল এলাকার বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ভাইব্রেটরের হেডের ব্যাসের চার গুণ।
ভাইব্রেশন যখন বন্ধ করতে হবে
১। কংক্রিট পৃষ্ঠ যখন ঔজ্জ্বল্যতা পাবে।
২। বাতাসের বড় বুদ্বুদ বের হবে না।
৩। ভাইব্রেটরের শব্দের সুর পরিবর্তন হবে।
৪। ভাইব্রেটরের ক্রিয়ার মধ্যে পরিবর্তন অনুভূত হবে।
ভাইব্রেটর ব্যবহারে যা করা যাবে না
১। ভাইব্রেটরকে কংক্রিটের বাইরে বেশিক্ষণ চালানো যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে গলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
২। ভাইব্রেটরকে শক্তি দিয়ে বা ধাক্কা দিয়ে কংক্রিটে ঢুকানো যাবে না, এতে এটি উলম্ব থাকবে না এবং রডে আটকে যেতে পারে।
৩। অতিরিক্ত একটি ভাইব্রেটর না রেখে কাজ শুরু করা উচিত হবে না।
স্মৃথিং মেশিনের বর্ণনা
স্মৃথিং মে-শিন হচ্ছে কংক্রিট ঢালাই এবং ভাইব্রেটর ব্যবহারের পর কংক্রিট ক্লাবের খুব মসৃণ পৃষ্ঠতল পেতে আধুনিক বিভিন্ন বড় বড় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এবং ঠিকাদার কর্তৃক ব্যবহৃত হালকা নির্মাণ যন্ত্র। একে পাওয়ার ট্রাউয়েল বা পাওয়ার ফ্লোট বা ট্রাউয়েল মে-শিনও (Power trowels, power float or trowel machine) বলা হয়। স্মৃথিং মে-শিন ব্যবহার করার ফলে কিউরিং দ্রুত হয় এবং নির্মাণকাজে সময় কম লাগে।
ব্যবহারের সময় এদের নিয়ন্ত্রণের উপর ভিত্তি করে দুই রকম স্মৃথিং মেশিন হয়ে থাকে। যথাঃ-
- রাইড অন পাওয়ার ট্রাউয়েল (উপরে চড়া পাওয়ার ট্রাউয়েল)
- ওয়াক বিহাইন্ড পাওয়ার ট্রাউয়েল (পিছনে চলা পাওয়ার ট্রাউয়েল)
রাইড অনপাওয়ার ট্রাউয়েলঃ এ ধরনের স্মৃথিং মে-শিনে একজন অপারেটর মেশিনের উপর সিটে বসে ম্মুথিং মেশিনকে বাটনের বা সুইচের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করে। ওয়াক বিহাইন্ড
পাওয়ার ট্রাউয়েলঃ এক্ষেত্রে একজন অপারেটর মে-শিনের পিছনে হেঁটে মেশিনকে নিয়ন্ত্রণ করে স্মৃথিং কাজ করে। কোন ধরনের সুথিং পাওয়ার ট্রাউয়েল বাছাই করতে হবে তা মূলত কাজের পরিধির উপর নির্ভর করে। রাইড অন মে-শিনের নিচের দিকে দুটি রোটার (rotor) বেড এবং দুইটি প্যান থাকে ফলে এর কার্যোপযোগিতা অনেক বেশি।
ওয়াক বিহাউন্ড মেশিন দামে সস্তা, ওজনে হালকা এবং কাজ করার সময় সামনের ভিক্সে কোন জায়গায় কাজ করছে তা দেখা যায়। এতে একটি রোটার থাকে।
সুদিং মেশিনের ব্যবহার
রাইড অন পাওয়ার ট্রাউয়েল এবংওয়াক বিহাইন্ড পাওয়ার ট্রাউয়েল দুই ধরনের মেশিনের ব্যবহারের মূলনীতি একই। প্লাবের কক্রেট যখন সেট হয়ে আসে যাতে অপরেটরের হালকা পায়ের ছাপ কংক্রিটের উপর পড়ে তখন দুহিং মেশিন ব্যবহার করতে হবে। দুই ধরনের কাজ যথা ফ্লোটিং এবং ফিনিশিং কাজের জন্য এ মেশিন ব্যবহার করা হয়।
এক জায়গায় নরম কংক্রিট মেশিন রাখা যাবে না ফ্লেটিং শেষে দ্রুত স্লাব হতে মেশিন সরিয়ে ফেলতে হবে। ওয়াক বিহাইন্ড মেশিনের বেলায় হ্যান্ডেল চাপ ঘুরানো বা তোলা দ্বারা মেশিনের কাজ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রাইড অন মেশিনের ক্ষেত্রে একই রকম তবে এর রোটারের ক্রিয়ার দিক ভিন্ন।
রাইড অন পাওয়ার বেশ বড় এবং বাসাবাড়ির বেজমেন্টে এবং দেয়ালের পাশে চালানো সুবিধাজনক নয়। এর দামও তুলনামূলক বেশি। এর কর্মদক্ষতা বেশি হওয়ায় প্রায় দ্বিগুণ দ্রুত কিউরিং করতে বাণিজ্যিকভাবে বেশি ব্যবহৃত হয়। এটি ব্যবহার করতে সহজ হলেও তবে পুরুত্বে বেশি উপযোগী নয়। ছোট কম পুরুত্বেও কাজের জন্য ওয়াক বিহাইন্ড মেশিন বেশ উপযোগী। যেহেতু দেয়ালের প্রান্তের দিকে মেশিন দ্বারা সুথিং সম্ভব হয় না তাই হ্যান্ড ট্রাউয়েল দিয়ে ঐ জায়গায় সুখিং করা হয়।
কংক্রিট মিক্সচার মেশিনের বর্ণনা
নির্মাণকাজে কংক্রিট মিশানোর জন্য যে মেশিন ব্যবহার করা হয় তাকে মিক্সচার মেশিন বলে। দুই ধরনের মিক্সার মেশিন সাধারণত আমাদের দেশে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। যথা-
১। অবিরাম মিক্সচার (Continuous mixers)
২। ব্যাচ বা সবিরাম মিক্সচার (Batch mixers)
কনটিনিউয়াস মিক্সচার বড় মাপের কাজে ঢালাইয়ের সময় যেখানে বেশি পরিমাণে এবং অবিরাম কংক্রিটের প্রয়োজন হয় সেখানে ব্যবহার করা হয়। নাম থেকে বোঝা যায় এ ধরনের মিক্সচারের ক্ষেত্রে যে হারে কংক্রিট মিক্সচার থেকে বের হয় ঐ হারে কংক্রিটের উপাদান মিক্সচারে দিতে হয়।
এগুলো ননটিলটিং ধরনের ড্রাম (অর্থাৎ ড্রাম কাত করার প্রয়োজন হয় না) যাতে ক্রু জাতীয় ব্লেড ড্রামের মধ্যে ঘূর্ণায়মান থাকে। তবে ড্রামটি বাহির মুখের দিকে সামান্য কাত করে তৈরি করা হয়। মিশ্রণ সময় ড্রামের এই ঢালের উপর নির্ভর করে (সাধারণত ১৫ ডিগ্রি)।
কংক্রিট মিশ্রণের সময় অনেক কম বলে কংক্রিটে বাতাসের পরিমাণ নির্ণয় সহজ হয় না। এ ধরনের মেশিন মিশ্রণে কংক্রিট মিক্স আশানুরূপ পেতে সতর্ক তদারকির দরকার হয়। কেননা এ ক্ষেত্রে মেশিন আবর্তিত হতে থাকে এবং কংক্রিটের উপাদানগুলো মিশ্রিত হয়ে ড্রামের ভেতর থেকে বের হয়ে যন্ত্রচালিত ক্যারিয়ারে ঢালাই স্থানে চলে যায়।
ব্যাচ মিক্সচার এর ঘূর্ণায়মান অক্ষের অবস্থান অনুসারে দুভাগে ভাগ করা য়ায়। যথা-
ক. ড্রাম মিক্সচার (আনুভূমিক বা অবনত)
খ. প্যান মিক্সচার (উলম্ব)
ড্রাম মিক্সচারের একটি ড্রাম থাকে এবং যাতে এর অক্ষের সাথে ঘূর্ণায়মান স্থায়ী ব্লেড (চিত্র ৪.৪) থাকে। ব্লেডের কাজ হচ্ছে ড্রাম ঘুরার সময় কংক্রিটের উপাদানগুলোকে উপরে তোলা। প্রতিবার ঘুরাতে উপরে ভোলা উপাদান ড্রামের নিচে চলে আসে এবং চক্র আবার শুরু হয়। প্যান মিক্সচারে ব্লেড বা প্যান থাকে যা এর অক্ষের সাথে ঘূর্ণায়মান থাকে। ড্রাম মিক্সচার তিন ধরনের হয়। যথা-
১। ননটিলটিং ড্রাম (non-tilting drum)
২। রিভারজিং ড্রাম (reversing drum)
৩। টিলটিং ড্রাম (tilting drum)
ননটিলটিং ড্রাম মিক্সচারে ড্রামের অবস্থানের দিক নির্দিষ্ট। উপাদানগুলো এক দিক হতে ঢুকানো হয় এবং অন্য দিক হতে বের হয়। রিভারজিৎ (চিত্র ৪.৫) ড্রাম ননটিলটিং-এর মতোই শুধু এর কংক্রিট তৈরির উপাদান ঢুকানো এবং বের করার জন্য এক মুখই ব্যবহৃত হয়। ড্রাম-মিশ্রণের জন্য এক দিকে ঘোরে এবং মিশ্রিত কংক্রিট বের করার জন্য অন্য দিকে ঘোরে। দুইধরনের বেড ড্রামের দেয়ালে লাগানো থাকে।
এক সেট ব্লেড এক দিকে ঘোরার সময় কংক্রিটকে ড্রামের উপরের কেন্দ্রের দিকে নিয়ে যায়। অন্য সেট ব্রেড বিপরীত দিকে ঘোরার সময় কংক্রিট বের করার জন্য ড্রামের মুখের দিকে নিয়ে আসে। রিভারজিং ড্রাম ১ ঘন মিটার কংক্রিট ব্যাচের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইদানীং ব্যবহৃত ট্রাক মিক্সচারগুলো ড্রাম মিক্সচারের এই রিভারজিং ক্যাটাগরিতে পড়ে।
ট্রাকের ড্রাইভার ড্রাম ঘুরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবে কংক্রিট ট্রাকে আনার আগেই মিশানো হয়েছে না ট্রাকেই মিশ্রিত হচ্ছে তার উপর ঘূর্ণায়মান গতি নির্ভর করে। সাধারণত এই গতি ১৫ আরপিএম (mm) হয়ে থাকে। যেখানে প্রিমিক্স কংক্রিটের বেলায় ২ থেকে ৬ আরপিএম হয়ে থাকে।
এছাড়া বর্তমানে নির্মাণকাজে রেডি মিক্স কংক্রিট ব্যবহার করা হয় যা রেডি মিক্স প্লান্টে তৈরি করে ঘূর্ণায়মান ড্রাম ট্রাকে বা ট্রানজিট মিক্সচারে করে নির্মাণ সাইটে আনা হয়।
প্যান মিক্সচার
সকল প্যান মিক্সচারের কাজ করার মূলনীতি একই। এতে একটি এক বা দুই সেট বেড যুক্ত সিলিন্ডারের প্যান (স্থায়ী বা ঘূর্ণমান) থাকে যাতে কংক্রিট মিশ্রিত হয় এবং একটি বেড প্যান পরিষ্কার করে। চিত্রে বিভিন্ন বেড এবং প্যানের বিভিন্ন রকম অবস্থান দেখানো হলো।
মিক্সচার মেশিনের ব্যবহায়
সাধারণ ব্যাচ মিক্সচার মেশিনের ব্যবহার:
- কংক্রিটের বিভিন্ন উপাদান পানি সহযোগে মিশিয়ে নির্দিষ্ট অনুপাতের মিশ্রণ তৈরি করতে।
- হ্যান্ড মিক্সিং এর তুলনায় অতি অল্প সময়ে ভালো কংক্রিট মিশ্রণ পাওয়া যায়।
- এতে শ্রম ও সময় দুটোই সাশ্রয় হয়ে থাকে।
- এতে মিশ্রণ বেশি সুষম ও পর্যাপ্ত হয় ফলে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী কংক্রিট বৃদ্ধি পায়।
- এতে সময় কম লাগে বিধায় কংক্রিটের ঢালাই-এ পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।

নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে অবিরাম মিক্সচার মেশিন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যথা-
- নির্মাণকাজ করার সময় অনেক কম থাকে।
- কংক্রিট আনলোডিং সময় অনেক বেশি।
- খুৰ দূরবর্তী স্থান যেখানে রেডি মিক্স উপযুক্ত নয়।
- কম স্লাম্প কংক্রিটের জন্য উপযোগী যেমন- রাস্তার পেভমেন্ট।
ট্রানজিট মিক্সচায়ের ব্যবহায়:
- কংক্রিট অনুপাত, ব্যাচিং, মিক্সিং এবং ডেলিভারি সবই সরবরাহকারী করে থাকে।
- উচ্চতর মান নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে।
- প্রশিক্ষিত কর্মী স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি ব্যবহারে গুণগত মানসম্পন্ন কংক্রিট পাওয়া যায়।
- নির্মাণসামন্ত্রী গুদামজাত করার জায়গা লাগে না বিশেষ করে সংকীর্ণ জায়গায়।
- ঠিকাদারের কংক্রিট মিশানোর সময় এবং শ্রম সাশ্রয় করে।
আরও দেখুনঃ