বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বালু

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বালু।

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বালু

 

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বালু

 

বালু

প্রকৃতিতে প্রাপ্ত শিলাকণা কোরটির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাই বালু। আবহাওয়াজনিত কারনে খালুর আকার আকৃতিতে বৈষম্য দেখা যায়। প্রকৃতিতে বিভিন্ন সাইজ ও গ্রেডে বালু পাওয়া যায়। বালুকণাগুলি কোণাকর, গোলাকৃতি বিশিষ্ট হয়। বালু একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ সামগ্রি। সকল প্রকার নির্মাণ কাজে বালু ব্যবহৃত হয়।

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বালু

 

বাংলাদেশের নদীবহুল এলাকার চরাঞ্চল এবং উঁচু ভূমিতে প্রচুর পরিমাণে মোটা বালু পাওয়া যায়। পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র নদী তীরে ও শেরপুরে বালু পাওয়া যায়। সিলেটের বালু সর্বাধিক মোটা। মোটা বালুতে কংক্রিট ভালো হয়। সিলেটের বালু এক-তৃতীয়াংশ ও অন্য মোটা বালু দুই-তৃতীয়াংশ মেশালে ভালো হয়। সরু বালু প্লাস্টারের কাজে লাগে। ভিট বালু জমি ভরাট করার কাজে লাগে।

বালুর উৎস অনুযায়ী বালু ভিন প্রকার ।যথা-

১। গর্ভের বালু

২। নদীর বালু এবং

৩। সমুদ্রের বালু

বালুর ক্ষতিকর পদার্থস

প্রকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত বালু সরাসরি নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিকর

পদার্থ থাকে, যেমন-

১। কাদা ও পলিকণা

২।লবণ

৩। উদ্ভিদকণা।

বালুর শ্রেণি বিভাগ ।

(ক) প্রাপ্যতা অনুযায়ী বালুর শ্রেণি বিভাগ :

১। গর্তের বালুঃ এ জাতীয় বালুর রঙ বাদামি বা হলুদাভ। এগুলো সূক্ষ্ণ কোণাকার এবং লবণযুক্ত। এগুলোতে সামান্য কাঁদা ও অন্যান্য অপদ্রব্য থাকতে পারে। এ কারণে এ জাতীয় বালুর ব্যবহারের পূর্বে চালুনিতে চেলে এবং ধৌত করে ব্যবহার করতে হয়। এ বালু ফাইন এগ্রিগেট হিসেবে মসলা ও কংক্রিটে ব্যবহার করা হয়। এ বালু মসলার জন্য বিশেষ উপযোগী।

২। নদীর বালু : এ জাতীয় বালুর রং অনেকটা সাদা এবং আকার অপেক্ষাকৃত ছোট এবং গোলাকৃতি বিশিষ্ট । এদের পৃষ্ঠ মসৃণ। এগুলোর সাথে সামান্য পরিমাণ কাঁদাজাত অপদ্রব্য ও গ্র্যাভেল মিশ্রিত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাই এগুলো উত্তমরূপে ধৌত করে এবং চালুনিতে চেলে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা শ্রেয়। গর্ভের বালি অপেক্ষাকৃত সূক্ষ্ণ বিধায় আস্তরের কাজের জন্য এগুলো বিশেষ উপযোগী। তবে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের নদীর বালু মসলা ও কংক্রিটের কাজেও ব্যবহার করা হয়।

৩। সমুদ্রের বালু : সমুদ্রের বালু সাদা রঙের এবং বেশ মসৃণ এবং গোলাকৃতি। এগুলোতে জীবাশ্ম ও লবণ মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। এগুলো নির্মাণে ব্যবহার করলে বায়ুমণ্ডল থেকে পানি শোষণ করে নেয় এবং নির্মাণ লোনাক্রান্ত হয়। এ বালু নির্মাণে ব্যবহার না করাই শ্রেয়।

(খ) আকার অনুযায়ী বালুকে তিন শ্রেনিতে ভাগ করা যায়। যথা-

১। মিহি বালু : এই জাতীয় বালু ১৬ নং (এ. এস. টি. এম) চালুনিতে চাললে কোনো অবশেষ থাকে না। এ জাতীয় বালু সাধারণত আস্তরণের কাজে ব্যবহার করা হয়।

২। মধ্যম বালু : এই জাতীয় বালু ৮ নং (এ. এস. টি. এম) চালুনিতে চাললে কোনো অবশেষ থাকে না। এ জাতীয় বালু গাঁথুনির কাজের মসলা তৈরি করার জন্য উপযোগী।

৩। স্থূল বা মোটা বালুঃ এ জাতীয় বালু ৪ নং (এ. এস. টি. এম) চালুনিতে চাললে কোনো অবশেষ থাকে না। এ জাতীয় বালু কংক্রিটের ফাইন এগ্রিগেট হিসেবে বেশ উপযোগী।

 

Google_news_logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বালুর সূক্ষ্মতার গুণাংক

সূক্ষ্মতা গুণাঙ্ক বালুর আকার সম্পর্কে ধারাণা প্রদান করে। বালু যত মিহি হয় তার সুক্ষ্মতা গুণঙ্ক তত কম হয় এবং যত স্কুল হয় সূক্ষ্ণতা গুণাঙ্ক তত বেশি হয়। সূক্ষ্মতা গুণাঙ্ক একটি ইমপেরিক্যাল সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা হয়। আমেরিকান প্রমাণ চালনি ৪ নং, ৮নং, ১৬ নং, ৩০ নং, ৫০ নং ও ১০০ নং এ অবশেষের পুঞ্জীভূত শতকরা হারের সমষ্টিকে ১০০ দিয়ে ভাগ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে বালুর সূক্ষ্ণতা গুণাঙ্ক বলে। মধ্যম বালুর সূক্ষ্মতা গুণাঙ্ক ১.৫ হতে ২.০০ এবং মোটা বালুর সূক্ষতা গুণাঙ্ক ২.০০ এর অধিক হয়ে থাকে। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত বালুর সূক্ষ্মতা গুণাঙ্ক ২ হতে ৩ হওয়া উচিত।

বালুর ব্যবহার

* ইমারত নির্মাণ কাজে বালু ব্যবহৃত হয়।

* ভূমি, জমিন, ভিটে ভরাটের কাজে বালু ব্যবহৃত হয়।

* কাঁচ শিল্পে বালু ব্যবহৃত হয়।

* রাস্তার কাজে ইটের সলিং-এর মধ্যস্থিত ভরাটের কাজে বালু ব্যবহার করা হয়।

* ভাস্ককার্যে ব্যবহার করা হয়।

* যে কোনো প্রকার গাথুনির মসলা তৈরির জন্য বালু ব্যবহার করা হয়।

* প্লাস্টারিং, পয়েন্টিং, ক্লাডিং কাজে বালু ব্যবহার করা হয়।

* কংক্রিট তৈরিতে বালি ব্যবহার করা হয়।

* বিটুমিনাস রাস্তার কাজে বালু ব্যবহার করা হয়।

 

বিল্ডিং মেইনটেন্যান্সের বালু

 

অনুশীলনী – ৬

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :

১। প্রাপ্যতা অনুযায়ী বালুকে কত ভাগে ভাগ করা যায়?

২। আকার অনুযায়ী বালুকে কত ভাগে ভাগ করা যায়?

৩। বালু কী?

৪। বালুর ক্ষতিকর পদার্থসমূহ কী কী ?

৫। বালুর উৎস কী কী ?

৬। বালুর ক্ষতিকর পদার্থসমূহ কী কী?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :

১। বালুর ব্যবহার লেখ?

২। বালুর সূক্ষ্মতার গুণাক কী?

৩। আকার অনুযায়ী বালুকে কত ভাগে ভাগ করা যায় সংক্ষিপ্ত বর্ণনা লেখ? ৪। প্রাপ্যতা অনুযায়ী বালুকে কত ভাগে ভাগ করা যায় সংক্ষিপ্ত বর্ণনা লেখ?

রচনামূলক প্রশ্ন :

১। বালুকে কত ভাগে ভাগ করা যায় বর্ণনা কর।

২। বালুর ব্যবহার ক্ষেত্রসমূহ লেখ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment