ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স | অধ্যায়-৯ | বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স-২

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স যা অধ্যায়-৯ এর বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স-২ এ অন্তভুক্ত।  শিক্ষা জাতীয় জীবনের সর্বতোমুখী উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষিত-দক্ষ মানব সম্পদ। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের কোনো বিকল্প নেই।তাই ক্রমপরিবর্তনশীল অর্থনীতির সঙ্গে দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষা ম ইতোমধ্যে পরিমার্জন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স

বিল্ডিং-এ ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যাল-এর গুরুত্ব

নিরাপত্তার শর্তাবলি যথাযথভাবে সম্পাদনের মাধ্যমে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে বৈদ্যুতিক লাইন টানা, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরগ্রাম সংযোগ বা মেরামত ও প্রয়োজনে পরিবর্তন করে নতুন ফিটিংস লাগানোর কাজ করে সার্বক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য এবং রুটিমুক্ত রাখার প্রক্রিয়াকে ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স বলে। এর ফলে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে মানুষ ও সম্পত্তির ক্ষতি হতে রক্ষা করা যায়।

 

ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স

 

নিরাপদ পরিবেশ বা অবস্থা

বর্তমানে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে মানবজীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ দৈনন্দিন জীবনের একটি পরিচিত এবং প্রয়োজনীয় অংশ, কিন্তু বিদ্যুৎ ও এর যন্ত্রপাতি ব্যবহারে অজ্ঞতা, অনভিজ্ঞতা, অপব্যবহার, অসতর্কতা ইত্যাদি কারণে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটে যাতে মানুষ ও সম্পত্তির ক্ষতি হতে পারে।

বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপন এবং নিরাপদ ব্যবহারের জন্য যে সমস্ত নিয়মনীতি রয়েছে সেগুলোকে বৈদ্যুতিক নিরাপদ বিধি বলা হয় । ইলেকট্রিসিটি নিরাপত্তা বিধি অনুযায়ী ওয়ার্কশপ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি, কলকারখানা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক কাজে যে সমস্ত বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

  • সরঞ্জামাদি ব্যবহার-এর আগে সরঞ্জামাদির অপারেশন সম্পর্কে জানতে হবে।
  • বৈদ্যুতিক সংযোগ যথাযথ নিয়মানুসারে সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে।
  • শুধু প্রশিক্ষিত ও দক্ষ ব্যক্তি দিয়ে মেশিন পরীক্ষা এবং মেরামত করার অনুমতি দিতে হবে।
  • একজন ব্যক্তি বৈদ্যুতিক পোস্টে এবং মিনার পোস্টে কাজ করার সময় নিরাপত্তা বেস্ট এবং গ্লোভস পরতে হবে। যারা মইয়ের উপর কাজ করবে তখন অন্য ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য মই ক্যাপচার করতে সাহায্য করতে হবে। পোস্ট এবং মই-এর নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে একটি দড়ি দিয়ে বাঁধা যেতে পারে।
  • আর্থিং করার পর ওভারহেড লাইনে কাজ করতে হবে।
  • সব হ্যান্ড টুলস-এর অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে এবং সরবরাহ তারের বর্তমান অবস্থা পরীক্ষা করে মেরামত কাজ পরিচালিত করতে হবে।
  • সঠিক উপায়ে সকেট থেকে প্লাগ খুলতে হবে, সকেট থেকে প্লাগ খুলতে তার ধরে টানা যাবে না।
  • অবশ্যই প্রধান সুইচ বন্ধ করার পরে, লুজ তার পরিবর্তন করতে হবে।
  • লোড-এর উপর নির্ভর করে যথেষ্ট বিদ্যুৎ প্রবাহের একক ফিউজ প্রদান করতে হবে।
  • গৃহের কোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হলে, এটা পরীক্ষার সময় সাপ্লাই থেকে সম্পূর্ণভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মেরামত করতে হবে।
  • বৈদ্যুতিক বর্তনীতে বিদ্যমান নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি কোনো কারণে খুলে ফেলা যাবে না।

 

Google_news_logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

  • যদি অগ্নি বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ঘটে, তাহলে অবিলম্বে প্রধান সুইচ বন্ধ করে অগ্নিনির্বাপন-এর জন্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা কোনো চ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সোডা অ্যাসিড নির্বাপক ব্যবহার করা যেতে পারে। পানি কোনো ক্রমে ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন হয় এবং গুরুতর দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
  • যদি কোনো ব্যক্তি বৈদ্যুতিক তার স্পর্শ করার কারণে বৈদ্যুতিক শক পায়, তাহলে অবিলম্বে সরবরাহ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঐ ব্যক্তিকে শুদ্ধ লাঠি, শুষ্ক কাঠের তক্তা বা শুকনো কাপড় ইত্যাদি ব্যবহার করে ওয়্যার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
  • যখন একটি রুমে ব্যাটারি চার্জ হবে তখন রুমে যুক্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে কোনো আগুন ব্যাটারির কাছাকাছি রাখা যাবে না।
  • ইলেক্ট্রোলাইট উৎপাদনে পানি অ্যাসিড-এ যোগ না করে, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ড্রপার দিয়ে ড্রপ করে পানি সংযোজন করতে হবে।
  • ভেজা হাতে সুইচ বা বৈদ্যুতিক সরবরাহের উপর কাজ করা যাবে না, যদি ব্যক্তির হাত ভেজা থাকে তবে গ্লোভস পরতে হবে।
  • সুইচ অফ থাকা অবস্থায় সুইচ চালু করতে হলে নিশ্চিত হতে হবে কেউ বৈদ্যুতিক বর্তনীতে কাজ করছে কিনা।

নিরাপদ কর্ম পদ্ধতি

নিরাপত্তার শর্তাবলি যথাযথভাবে অবগত এবং পালন করে বৈদ্যুতিক কাজ করাকেই নিরাপদ কর্মপদ্ধতি বলে। যিনি বৈদ্যুতিক ডিপার্টমেন্টে কাজ করেন তাকে অবশ্যই সাবধানে সরঞ্জামাদি এবং কর্মীদের কোনো ক্ষতি ছাড়াই কাজ পরিচালনা করতে হবে। একটি দুর্ঘটনা ভারী ক্ষতি ঘটাতে পারে, এ কারণে তার সব বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির অপারেশন জানা আবশ্যক।

বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ভুলভাবে চালানো ভারী ক্ষতির কারণ হতে পারে। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা শুধু অসতর্কতার কারণে ঘটতে পারে। এই কারণে, শ্রমিক আহত হবে, সরঞ্জামাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কাজ থামিয়ে দিতে পারে। এই সমস্যা এড়ানোর জন্য বৈদ্যুতিক শ্রমিকদের আবশ্যই নিয়ম এবং প্রবিধান অনুসরণ করে কাজ করতে হবে।

দুর্ঘটনা যে কোনো সময় ঘটতেই পারে। বৈদ্যুতিক কাজে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ব্যবহার করলে অনেক ক্ষেত্রে সহজেই দুর্ঘটনা এড়ানো এবং দ্রুত করা যায়। এ কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো হলো-

প্রতিরোধক সরঞ্জাম PPE (Personal Protective Equipment )

 

ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স

 

নিবারণকারী সরঞ্জাম

 

ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স

 

ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য যে সকল সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় তাকে PPE বলে। PPE তে বুঝায় (Personal Protective Equipment)

অনুশীলনী-৯

অতি সংক্ষিপ্ত

১। ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স কাকে বলে?

২। বৈদ্যুতিক নিরাপদ বিধি কাকে বলা হয়?

৩। নিরাপদ কর্মপদ্ধতি কাকে বলে?

8। PPE কী ?

সংক্ষিপ্ত

১। ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স ব্যাখ্যা কর।

২। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটে?

৩। বৈদ্যুতিক কাজে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও নিবারণের জন্য প্রতিরোধক সরঞ্জামগুলোর নাম লেখ ।

৪। বৈদ্যুতিক কাজে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও নিবারণের জন্য নিবারণকারী সরঞ্জামগুলোর নাম লেখ।

রচনামূলক

১। বৈদ্যুতিক কাজে যে সমস্ত বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় সেগুলোর বর্ণনা দাও।

২। নিরাপদ কর্ম পদ্ধতি বলতে কী বোঝ?

আরও দেখুন :

Leave a Comment