স্কেলের শ্রেণিবিভাগ আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং – ১ [ Civil Engineerng Drawing – 1 ]” এর “ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং স্কেলের মূলনীতি” অধ্যায় এর পাঠের অন্তর্ভুক্ত।
Table of Contents
স্কেলের শ্রেণিবিভাগ (Types of scales) ঃ
গৃহীত পরিমাপ এবং বস্তু বা কাঠামোর প্রকৃত পরিমাপের অনুপাতের ভিত্তিতে স্কেল:
ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং-এ গৃহীত পরিমাপ এবং বস্তু বা কাঠামোর প্রকৃত পরিমাপের অনুপাতের ভিত্তিতে স্কেল প্রধানত ৩ প্রকার, যথা-
(a) সংকোচিত স্কেল (Reducing scale)
(b) পূর্ণ স্কেল (Full scale)
(c) বিবর্ধিত স্কেল (Enlarged scale) ।
(a) সংকোচিত স্কেল (Reducing scale) :
বস্তু বা কাঠামোর আকার কাগজের আকারের তুলনায় অনেক বড় হলে এ ে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে ড্রয়িং-এ আকার এবং বস্তুর প্রকৃত আকারের অনুপাত এক এর চেয় কম। যেমন- ১cm = ১০০ cm, একে ১০০ দ্বারাও প্রকাশ করা হয়।
(b) পূর্ণ স্কেল (Full scale) :
এক্ষেত্রে বস্তু বা কাঠামোর ড্রয়িং-এ পরিমাপ এবং প্রকৃত পরিমাপ একই। যেমন- ১cm = ১
ৰা ১: ১
(c) বিবর্ধিত স্কেল (Enlarged scale) ঃ
বস্তু বা কাঠামোর প্রকৃত আকার অত্যন্ত ক্ষুদ্র হলে (যেমন- হাতঘড়ির ভেতে যন্ত্রাংশ) এদেরকে সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে ড্রয়িং-এ এদের আকার বৃদ্ধি করতে হয়। এক্ষেত্রে ড্রয়িং ও প্রকৃত পরিমাপের অনুপ এক এর বেশি। যেমন- ১০cm =১ cm বা ১০:১
ব্যবহৃত স্কেলের মান পাঠ করার পদ্ধতি অনুসারে স্কেল এর শ্রেণিবিভাগ:
এ ছাড়াও পরিমাপ করার জন্য ব্যবহৃত স্কেলের মান পাঠ করার পদ্ধতি অনুসারে নিম্নোক্ত শ্রেণির স্কেল পাওয়া যায়, যাে প্রত্যেকের সূক্ষ্মতা এবং ব্যবহারের ক্ষেত্র ভিন্ন।
(a) সরল বা প্লেইন (Plain) স্কেল।
(b) কর্ণ বা ডায়াগোনাল (Diagonal) স্কেল
© ভার্নিয়ার স্কেল (Vernier scale)
(d) মাইক্রোমিটার স্ক্রু-গঞ্জ (Micrometer screw gauge
(e) তুলনামূলক বা কম্পারেটিভ স্কেল (Comparative scale)
(f) কর্ডের স্কেল (Scale of chord)
(a) সরল বা প্লেইন (Plain Scale)ঃ
এ স্কেল-এ, এটির মূল দৈর্ঘ্যকে কতকগুলো সমান অংশে বিভক্ত করে প্রত্যেক অংশ আবার প্রয়োজনমতো কতগুলো সমান অংশে বিভক্ত করা হয়। এটি দ্বিমাত্রিক স্কেল অর্থাৎ দু’ধরনের পরিমাপ পাওয়া যায়; যেমন সেমি এবং মিমি, ফুট এবং ইঞ্চি ইত্যাদি।
(b) কর্ণ বা ডায়াগোনাল (Diagonal scale) ঃ
ডায়াগোনাল স্কেল একটি সূক্ষ্ম পরিমাপক স্কেল। সূক্ষ্ম পরিমাপ পাঠ করার জন্য প্লেইন স্কেলে অধিকসংখ্যক উপবিভাগ করতে গেলে রেখাগুলো পরস্পরের খুব নিকটবর্তী হয়ে যায়, ফলে পাঠ নিতে সমস্যা হয়। তাই প্লেইন স্কেলে সাধারণত ন্যূনতম মাপ বরাবর হেলানো সরল রেখা টানা হয়, যা ডায়াগোনাল স্কেল নামে পরিচিত। এটি ত্রিমাত্রিক স্কেল, এর মাধ্যমে তিন ধরনের পরিমাপ পাওয়া যায়।
(c) ভার্নিয়ার ক্ষের (Vernier scale) :
সাধারণত মিটার স্কেলের সাহায্যে আমরা মিলিমিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্য মাপতে পারি, কিন্তু মিলিমিটারের ভগ্নাংশ যেমন- 0.2mm বা 0.6mm ইত্যাদি দৈর্ঘ্য মাপা যায় না। এজন্য স্লাইড ক্যালিপার্সের প্রধান স্কেলের সাথে গা ঘেঁষে চলাচল করতে পারে এমন একটি ক্ষুদ্র স্কেল যুক্ত থাকে। যার মাধ্যমে মিলিমিটারের ভগ্নাংশ নির্ভুলভাবে পরিমাপ করা যায়। একে ভার্নিয়ার স্কেল বলে।
(d) মাইক্রোমিটার ভূ-গঞ্জ (Micrometer screw gauge) :
মাইক্রোমিটার ভূ-গজের মাধ্যমে ক্ষুদ্র জিনিসের দৈর্ঘ্য সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করা যায়। এ ছাড়া সরু তারের ব্যাস, ধাতব পাতের পুরুত্ব এবং তারের প্রস্থচ্ছেদ নির্ণয়ে এটি ব্যবহৃত হয়। মহাজাগতিক বস্তুর আপাত ব্যাস নির্ণয়ে টেলিস্কোপ কিংবা মাইক্রোস্কোপ ও মাইক্রোমিটার ব্যবহৃত হয়। এ মাধ্যমে 0.01mm পর্যন্ত সূক্ষ্ম পরিমাপ পাঠ করা যায়।
(e) তুলনামূলক বা কম্পারেটিভ স্কেল (Comparative scale) :
এটি একটি নন-মেট্রিক স্কেল, যা ক্রমনির্দেশক হিসেবে কাজ করে। এ পদ্ধতিতে একই সাথে দুই বা ততোধিক বস্তুকে প্রত্যক্ষভাবে তুলনা করা হয়ে থাকে।
(f) কর্ডের স্কেল (Scale of chord) :
এটি সাধারণত কৌণিক মাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: